• দিল্লিতে নয়, প্রয়োজনে কলকাতাতেই জেরা করতে হবে অভিষেককে
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • আর দিল্লিতে ডেকে নয়, প্রয়োজনে কলকাতাতেই জেরা করতে হবে ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে। কিন্তু কাকে? তিনি আর কেউ নন, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। আরও একবার ইডির বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে বড়ো জয় হলো অভিষেকের। মঙ্গলের অন্তবর্তী রায়ে এই বিষয়টিই সাফ জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। একই নীতি প্রযোজ্য হবে অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

    এই মর্মে ইডির সমনকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন অভিষেক এবং তাঁর স্ত্রী। এবার তাঁদের অবস্থান তথা আবেদনকেই মান্যতা দিল সুপ্রিম কোর্ট। জানানো হলো, আগের মতোই কলকাতাতে অভিষেক এবং তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে করতে পারবে ইডি। কয়লা পাচার কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিষেক এবং তাঁর স্ত্রীকে দিল্লিতে ডাকার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।  মঙ্গলবার অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট বা পিএমএলএ -এর অধীনে দিল্লিতে সমন জারির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর এই প্রশ্ন এবং নিজ প্রশ্নের সাপেক্ষে দেওয়া যুক্তির ভিত্তিতেই সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দান করে।

    প্রসঙ্গত সম্প্রতি অভিষেকের আইনজীবী কপিল সুপ্রিম কোর্টে ইডির গতিবিধির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, “দিল্লিতেই কেন জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে?” তিনি জানিয়েছিলেন, “কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে কোনও কুসংস্কার কাজ করছে ইডির? অভিষেক অভিযুক্ত নাকি সাক্ষী, কি হিসেবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাও কেন ইডি স্পষ্ট করছে না?” তাঁর আরও বক্তব্য ছিল, “১৬০ নম্বর ধারায় দু’টি ক্ষেত্রেই তলব করা যায়। আমি তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। কিন্তু কাল আমার কোনও স্টেটমেন্ট আমার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হতে পারে। সিবিআইয়ের ক্ষেত্রে তাও প্রভিশন রয়েছে যে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে রাজনৈতিক কারণে বা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ব্যবহার করা হলে তাঁর কর্মী আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। কিন্তু ইডির ক্ষেত্রে তো সেটাও নেই।” এবার তারই পাল্টা জবাব পান আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং ইডির বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে জয় হয় অভিষেক-রুজিরার।

    উল্লেখ্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবার ইডি কেন দিল্লিতে ডাকছে, কেন কলকাতার তলব নয়, তা নিয়ে অনেকদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। অভিষেকও প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁকে কলকাতায় কেন ডাকে না? কেন দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়? এই সংক্রান্ত একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছিল, অভিষেককে কলকাতায় ডেকে পাঠানো হোক। সে সময় ইডির আপত্তি ছিল এ নিয়ে। পাল্টা ইডির বক্তব্য, তাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির উপর বিভিন্ন জায়গায় হামলার প্রসঙ্গও তুলে ধরেছিল তারা। আদালতের বক্তব্য, সমস্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশের উপর ফের শুনানি শুরু হয়েছে। যে পদ্ধতিতে অভিষেককে তলব করা হচ্ছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তা নিয়ে জোরালো সওয়াল করেন সিব্বল। কলকাতায় ইডি-র পূর্বাঞ্চলীয় অফিস থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে দিল্লিতে তলব করা হচ্ছে, তাই স্পষ্ট জানতে চান আইনজীবী। বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চে মঙ্গলবার ফের এই মামলার শুনানি হয়। তাতেই জয় হয় অভিষেকের।

  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)