• ডাক্তারদের ফাঁকিবাজি রোধে ডিজিটালি নজর
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: নদীয়া জেলার শতাধিক আয়ূষ ডিসপেনসারিকে রূপান্তরিত করা হচ্ছে স্মার্ট ক্লিনিকে। এর ফলে গ্রামীণ এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। চিকিৎসাক্ষেত্রে আধুনিকরণের ছোঁয়া পাবে প্রত্যন্ত এলাকাও। বেসরকারি হাসপাতালের ডিজিটাল পরিষেবার ধাঁচেই এই ক্লিনিক তৈরি করা হবে। পাশাপাশি এই স্মার্ট ক্লিনিক তৈরি হলে পঞ্চায়েতের চেম্বারে বসা ডাক্তারদের ফাঁকিবাজি আটকানো যাবে। ডাক্তাররা পঞ্চায়েতে এসে ঠিকমতো চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন কি না, তার ডিজিটাল নজরদারি চালানো হবে। শুধু তাই নয়, গ্রামবাসীরা অনলাইনেই চিকিৎসার জন্য স্লট বুকিংও করতে পারবেন। তারপর নির্দিষ্ট দিনে পঞ্চায়েতে এসে সেই ব্যক্তি এসে চিকিৎসা করাবেন। বিনামূল্যেই দেওয়া হবে ওষুধ। পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের আওতায় রয়েছে এই চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা।‌


    নদীয়া জেলা অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অনুপ কুমার দত্ত বলেন, ‘জেলায় যে সমস্ত আয়ূষ ডিশপেনসারি রয়েছে, সেগুলিকে স্মার্ট ক্লিনিক হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।‌ সেখানে চিকিৎসা পরিষেবা আরও উন্নত হবে। তার জন্য ট্রেনিং দেওয়ার কাজ চলছে।’ 


    নদীয়া জেলার ১৮৫টির গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে আয়ূষ ডিশপেনশারি রয়েছে। যার মধ্যে ১৪টি আয়ুর্বেদিক পোস্ট, ৫৭টি রাজ্য সরকারের হোমিওপ্যাথিক পোস্ট, ন্যাশনাল হেলথ মিশন স্কিমে আরও ৫৫টি ডিসপেনশারি রয়েছে। যার মধ্যে বর্তমানে ১০৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এই চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। বাকি ২৩ জায়গায় বর্তমানে ডাক্তার নেই। সেই সমস্ত জায়গায় খুব শীঘ্রই ডাক্তার নিয়োগ করা হবে। মূলত যেসব জায়গায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই, সেখানেই পঞ্চায়েতের তরফ থেকে ডিসপেনসারিতে চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়। ‌কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, ডিসপেনসারি চালু থাকলেও সেখানে ডাক্তার নিয়মিত বসেন না। যার ফলে গ্রামীণ এলাকায় চিকিৎসা পরিষেবা ব্যহত হয়। এমনকি কতজন রোগী ডিসপেনসারিতে চিকিৎসা করাতে আসছেন, তারও হিসেব থাকে না। 


    তাই পরিষেবাকে আরও শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে এই স্মার্ট ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। যাতে পঞ্চায়েতের চিকিৎসা কেন্দ্রে ডাক্তার উপস্থিতি সুনিশ্চিত করা যায়। কারণ স্মার্ট ক্লিনিকে নির্দিষ্ট পোর্টালের মাধ্যমে প্রতিদিন ডাক্তারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি সেই ডাক্তার প্রতিদিন কতজন রোগীকে দেখলেন, তার তথ্যও তুলে ধরতে হবে পোর্টালে। ডাক্তারকে প্রত্যেক রোগীর প্রেসক্রিপশন পোর্টালে আপডেট দিতে হবে। 


    প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, রোগীকে পোর্টালে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। সেখানে তিনি তার পরিবারের লোকজনকে যুক্ত করতে পারবেন। সেই পোর্টালেই গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাক্তারের সমস্ত তথ্য পাবেন রোগী তার পরিবারের লোকজন। এমনকি সেই পোর্টাল থেকে রোগী পুরোনো প্রেসক্রিপশন দেখতে পারবেন। 


    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলার চাকদা ব্লকের দুবড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে আয়ূষ ডিসপেনসারি রয়েছে। কিন্তু বিগত দেড় বছর হল সেখানে ডাক্তার আসেন না। অথচ, সরকারি খাতায় ডিসপেনসারি সক্রিয় রয়েছে। বিষয়টি ইতিমধ্যেই প্রশাসনের নজরে এসেছে। প্রশাসনের তরফ থেকে পঞ্চায়েতকে একাধিকবার বলা হয়েছে সেই ডিসপেনসারিগুলি সক্রিয় করতে। কিন্তু তাতে ভ্রুক্ষেপ করেনি পঞ্চায়েত। 
  • Link to this news (বর্তমান)