• স্বাধীনতা দিবসের টানা ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামতে চলেছে মুর্শিদাবাদ জেলায়
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, লালবাগ: মাঝে শুধু শুক্রবার। ওই একটা দিন ম্যানেজ করলেই টানা চারদিনের সরকারি ছুটি। স্বাভাবিকভাবেই পুজোর আগে এই ছুটি কাটাতে সাবেক নবাবি মুলুক মুর্শিদাবাদের দর্শনীয় স্থানগুলিতে পর্যটকদের ঢল নামতে চলেছে। বৃহস্পতিবার থেকে ওই কয়েকদিন রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক সমাগমের আশায় বুক বেঁধেছেন পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন মহল। জেলা হোটেল সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাধীনতা দিবসে নবাবের শহরে ছুটি কাটানোর জন্য প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে হোটেলের ঘর বুকিং শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে বড় হোটেলগুলির ঘর বুকিং প্রায় শেষ পর্যায়ে। মাঝারি ও ছোট হোটেলগুলিতে জোরকদমে চলছে। এদিকে স্বাধীনতা দিবসে পর্যটক সমাগমকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নজরদারি চালাতে দর্শনীয় স্থানগুলির পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। হোটেলগুলির রেজিস্টার বুক নিয়মিত নজরদারি করা হচ্ছে। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া হোটেলে ঘর দেওয়া যাবে না বলে হোটেল কর্তৃপক্ষকে পুলিস প্রসাশনের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন কেউ নজরে এলে স্থানীয় থানা বা পুলিস প্রশাসনকে জানাতে বলা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার (লালবাগ) রাসপ্রীত সিং বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে জেলার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত ও ভিনরাজ্য থেকেও প্রচুর সংখ্যায় পর্যটক মুর্শিদাবাদে আসেন। সেই কারণে কোনওপ্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে স্বাধীনতা দিবসের দিনকয়েক আগে থেকেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নজরদারি শুরু হয়েছে। হোটেল, ধাবাগুলিতে রেজিস্টার ঠিকমতো মেনটেন করা হচ্ছে কি না, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। স্বাধীনতা দিবসের সকাল থেকে দিনভর দর্শনীয় স্থানগুলির পাশাপাশি শহরজুড়ে ট্রাফিক পুলিসের পেট্রলিং চলবে। হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়ামের মূল গেটের সামনে মেটাল ডিটেক্টর চেকিং ব্যবস্থা রাখা হবে। প্রত্যেক পর্যটককে মেটাল ডিটেক্টর চেকিং ব্যবস্থার মধ্যে দিয়েই হাজারদুয়ারির ভিতরে প্রবেশের অনুমতি মিলবে।ইদু উল ফিতর ও ইদুজ্জোহা উৎসব উপলক্ষ্যে দিনকয়েক মুর্শিদাবাদে পর্যটকদের ভিড় হয়। উৎসবের আবহ কাটতেই আবার মুর্শিদাবাদ পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে। পুজোর মরশুমের আগে মহরম ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে মুর্শিদাবাদের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পর্যটকদের দেখা মেলে। ফলে হাসি ফোটে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন পেশার মানুষের মুখে। শহরের এক হোটেল মালিক বলেন, মহরমে দিনকয়েক ভালো ভিড় হয়েছিল। স্বাধীনতা দিবসের পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার ম্যানেজ করে অনেকে টানা চার দিনের ছুটি কাটাতে মুর্শিদাবাদে আসছেন। স্বাভাবিকভাবে এক সপ্তাহ আগেই হোটেলের  ঘর বুকিং হয়ে গিয়েছে। অপর এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী জেলা মুর্শিদাবাদ। বাংলাদেশ অশান্ত হয়ে ওঠায় মুর্শিদাবাদের পর্যটনে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রভাব পড়েনি। দু’দিন আগেই বৃহস্পতিবার থেকে টানা চারদিন সব ঘর বুকিং রয়েছে। শহরের এক ব্যবসায়ী বলেন, এখানকার ব্যবসা মূলত পর্যটক নির্ভর। সেই কারণে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত মানুষ পুজো ও শীতের মরশুমের পাশাপাশি বিশেষ দিনগুলির দিকে তাকিয়ে থাকেন।  মুর্শিদাবাদ সিটি ব্যবসায়ীকল্যাণ সমিতির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ১৫ আগস্ট উপলক্ষ্যে প্রতি বছর প্রচুর মানুষ আসেন। বাংলাদেশে অস্থিরতার কারণে এবছর পর্যটক সমাগম নিয়ে এক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশের পরিস্থতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করায় দিনকয়েক ভালো পর্যটক সমাগম হবে এমনটাই আশা করা যাচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)