• দশদিনের ব্যবধানে দু’টি সেতু ভেঙে সড়ক বিচ্ছিন্ন দুই গ্রাম
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, আরামবাগ: এক সপ্তাহ আগে জলের স্রোতে ভেসে গিয়েছিল বাঁশের সেতু। কোনওরকমে প্রাণ হাতে নিয়ে বসে যাওয়া কংক্রিটের সেতু দিয়ে যাতায়াত করছিল মানুষ। এবার সেই কংক্রিটের সেতুটিও একেবারে ভেঙে পড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল আরামবাগ থানা এলাকার আরান্ডি গ্রাম ও মাধবপুর গ্রাম। ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা বলেন, গত বছর বর্ষায় ইঁটের পিলার ভেঙে বসে গিয়েছিল কংক্রিটের সেতু। ওই সেতুটি মেরামত না করে পাশে একটি বাঁশের সেতু তৈরি করে যাতায়াত চলছিল। আমরা দাবি করেছিলাম, নতুন কংক্রিটের সেতু তৈরি করে দেওয়ার। কিন্তু তা মানা হয়নি। এখন দশ দিনের মধ্যে দুটো সেতুই ভেঙে গিয়েছে। আমরা খুব অসুবিধার মধ্যে রয়েছি। দ্রুত এই সমস্যার সমাধানের দাবি জানাচ্ছি। এই প্রসঙ্গে মাধবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ খাদেমুল ওহাব বলেন, পুরো বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ ব্লকের আরান্ডি এবং মাধবপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে গিয়েছে কাঁটায় খাল। বহু বছর পূর্বে ওই খালের ওপরেই একটি কংক্রিটের সেতু তৈরি করে দুই গ্রামের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হয়। ওই সেতুটির নামকরণ করা হয় জয়সিংহচক সেতু। ইঁটের পিলার দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল কংক্রিটের সেতুটি। গত বছর বর্ষার সময় ইঁটের পিলারে ধস নেমে সেতুটি বসে যায়। এর ফলে ওই সেতুটির উপর দিয়ে চারচাকা গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে স্থানীয় মানুষজন তাঁদের কৃষিজাত পণ্য আর নিয়ে যেতে পারেন না। স্কুলের পুল কার চলাচল বন্ধ হয়ে যায় ওই রাস্তা দিয়ে। গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য ওই সেতুর উপর দিয়ে না নিয়ে যেতে পারায় প্রায় চার কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয় চিকিৎসা কেন্দ্রে। এর ফলে তাঁদের চরম সমস্যার মধ্যে দিয়ে এভাবেই দিন কেটে যাচ্ছিল। এমত অবস্থায় মাস ছয়েক  আগে তাঁদের মধ্যে ওই সেতু তৈরির দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে মায়াপুর-গড়ের ঘাট প্রধান সড়ক অবরোধ করে ওই সেতু তৈরির দাবিতে। টায়ার জ্বালিয়ে চলে দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরামবাগ থানা থেকে ছুটে যায় পুলিস। সেই সময়ে সেতু তৈরির আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। তার পাশে যাতায়াতের জন্য তৈরি করা হয় একটি বাঁশের সেতু। ওই সেতুটি সংকীর্ণ হওয়ায় তার উপর দিয়ে মোটর সাইকেল, চারচাকা গাড়ি কিছুই যেতে পারে না। তাই গ্রামবাসীদের মধ্যেই কেউ কেউ প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ওই ভগ্নপ্রায় কংক্রিটের সেতুর উপর দিয়েই মোটর সাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করছিলেন। এরই মধ্যে দশ দিনের ব্যবধানে ওই দুটি সেতুই ভেঙে পড়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল। এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মণির বলেন, আগে আমাদের এই কংক্রিটের সেতুর ওপর দিয়েই চারচাকা গাড়ি যেত। 

    ট্রাক্টর, ইঞ্জিন ভ্যানে করে আমরা আমাদের জমির ফসল এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে পারতাম। গত বছর বর্ষায় সেতুটি ভগ্নপ্রায় হয়ে পড়েছিল। এ বছরের বর্ষায় সেতুটি পুরোপুরি ভেঙে গেল। অস্থায়ী বাঁশের সেতুটিও জলের স্রোতে ভেসে গিয়েছে। আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। আমরা অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।  
  • Link to this news (বর্তমান)