• এক মাসের মধ্যে হাতুয়াড়াতে ক্যাম্পাস স্থানান্তরের প্রতিশ্রতি
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: পড়ুয়াদের আন্দোলনের জেরে এক মাসের মধ্যে সদর হাসপাতাল থেকে হাতুয়াড়াতে ক্যাম্পাস স্থানান্তরের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিলেন পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি। সেইসঙ্গে পড়ুয়াদের একাধিক দাবিও মেনে নেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে মঙ্গলবারও গেট বন্ধ রেখে সকাল থেকে দিনভর আন্দোলনের জেরে আউটডোর পরিষেবা প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। চিকিৎসা না করিয়েই ফিরতে হয় তাঁদের। 

    প্রসঙ্গত, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে আগেই আন্দোলন শুরু করেছিলেন পুরুলিয়া দেবেন মাহাত গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। সোমবার বিকেল থেকে তাঁরা নিরাপত্তার খাতিরে সদর হাসপাতাল থেকে হাতুয়াড়াতে ক্যাম্পাস স্থানান্তর সহ একাধিক দাবিতে গেট আটকে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। রাতভর তারা একই দাবিতে অনড় থাকেন। পরদিন সকাল থেকে নতুন উৎসাহে আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা। কলেজের গেটে এমএসভিপি সহ অন্যান্য আধিকারিকদের ফোন নম্বর লিখে পোস্টার সাঁটিয়ে দেন। কারও গেট বন্ধের কারণ জানার হলে ওই নম্বরে ফোন করার বার্তা দেন। কলেজের গেট না খোলায় একাধিকবার রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের বচসা হয়। কয়েকজন রোগীর আত্মীয় জোর করে কলেজে ঢুকতে চাইলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যান্য চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরাও এদিন কলেজে ঢুকতে পারেননি। আন্দোলনকারী পড়ুয়া অরিত্র মুন্সী, হিমাংশু মন্ডলরা বলেন, চার বছর ধরে স্থানান্তরের কথা শুনে আসছি, কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। রাতে পড়ুয়ারা সদর হাসপাতাল থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে হাতুয়ারাতে কীসে আসবে সে বিষয়েও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও উদ্যোগ নেয়নি। কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সহ অনেকেই ব্যক্তিগত কাজে কলেজের গাড়ি ব্যবহার করে থাকেন। একা যাওয়া আসার জন্য গাড়ি ব্যবহার করেন। অথচ রাতে পড়ুয়াদের যাতায়াতের কোনও ব্যবস্থা নেই। কেউ অসুস্থ হলে হাতুয়াড়া থেকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে যাওয়ার মতো অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবাটুকুও পাওয়া যায় না। এদিন রোগীদের সমস্যা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু হাতুয়াড়াতে স্থানান্তর সম্পূর্ণ হলে সবারই দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা হবে। এদিন এমএসভিপি লিখিতভাবে দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। এমএসভিপি সুকোমল বিষয়ী বলেন, পড়ুয়াদের দাবিগুলি যুক্তিপূর্ণ। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে স্থানান্তরের কাজ শুরু হবে এবং প্রায় এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়েও একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 

    অন্যদিকে, আউটডোর পরিষেবা বন্ধ থাকায় ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়েন রোগী এবং তাদের আত্মীয়রা। সাঁওতালডি থেকে শাশুড়িকে নিয়ে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন মল্লিকা বাউরি। তিনি বললেন, এত দূর থেকে বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে এলাম। গেট বন্ধ দেখে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছিলাম। আন্দোলনকারীদের বারবার অনুরোধ করেও লাভ হয়নি। ডাক্তার দেখাতেই পারলাম না। 
  • Link to this news (বর্তমান)