•  বিহারের পিয়ালী মাছ বিক্রি হচ্ছে বোরলি নামে, ঠকছেন ক্রেতারা
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: দেখতে অনেকটা একইরকম। বোরলির নাম করে বিহার থেকে আসা পিয়ালী মাছ বিক্রি করা হচ্ছে ক্রেতাদের। কেবল তাই নয়, তিস্তার বোরলি মাছ যে দামে বিক্রি হয়ে থাকে, অনেক সময় সেই দামও নেওয়া হচ্ছে। কার্যত ভুল বুঝিয়ে ক্রেতাদের এভাবে বোকা বানানোর ঘটনায় কানে পৌঁছেনে মৎস্য দপ্তরের। তাই এবার অভিযানে নামতে যাচ্ছে জলপাইগুড়ি জেলা মৎস্য দপ্তর। দপ্তরের অফিসারদের বক্তব্য, বাজারে বাজারে খোঁজখবর শুরু করা হয়েছে। ক্রেতাদের বোঝানো হবে কোনটা, বোরলি আর কোনটা পিয়ালী মাছ। 

    দপ্তর সূত্রে খবর, বোরলি মাছ কেবলমাত্র জলপাইগুড়ির তিস্তা ও কোচবিহার জেলায় তোর্সা নদীতেই মেলে। তোর্সার বোরলি তিস্তার থেকে আকারে কিছুটা ছোট। অন্যদিকে, বোরলির মতো দেখতে হলেও স্বাদে-গন্ধে অনেকটাই পৃথক বিহার থেকে আমদানি হওয়া পিয়ালী মাছ। পিয়ালী মূলত বিহারের কুশি নদীর মাছ হলেও এখন ব্যাপকহারে চাষ করা হচ্ছে। চেহারা অনেকটা একইরকম হওয়ার কারণে মাছ ব্যবসায়ীরা ওই মাছকেই তিস্তার বোরলি বলে বিক্রি করেন। 

    জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা জয়ন্ত সরকার বলেন, কেবল বাজারগুলিতে নয় পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে যাঁরা মাছ বিক্রি করছেন তাঁরাও বিহারের পিয়ালীকে তিস্তার বোরলি বলেই বিক্রি করছেন। আরএক বাসিন্দা নিমাই মজুমদার জানান, এ ব্যাপারে মৎস্য দপ্তরের এগিয়ে আসা উচিত। বোরলি বলে বেশি দামে যে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে তা অদৌ বোরলি কি না সেটা বাজারে গিয়ে যাচাই করা উচিত। নইলে ক্রেতার প্রতারিত হচ্ছেন। 

    জলপাইগুড়ি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র রামশাইয়ের মৎস্য বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল ঘোষ বলেন, চেহারা একরম হওয়ার সুযোগটাই নিচ্ছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। স্বাদের দিক থেকে বোরলির সঙ্গে পিয়ালীর কোনও তুলনা হয় না। বোরলির আঁশ চকচকে রূপোলি রঙের। পেটের দিকে হালকা নীল এবং পাখনা কিছুটা হলুদ। কিন্তু, জায়গার তারতম্যের জন্য কিছুটা হেরফের হয়ে থাকে। অন্যদিকে, পিয়ালী মাছ অনেকটা হলদেটে। আকারে ছোট। 

    জলপাইগুড়ি জেলা মৎস্য আধিকারিক অমিত সরকারের সংযোজন, বোরলি মাছ কেবলমাত্র তিস্তা এবং তোর্সাতেই পাওয়া যায়। একবার এই মাছের কৃত্রিম প্রজননের চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তাতে তেমন সাফল্য আসেনি। তবে বাজারে যেভাবে পিয়ালীকে বোরলি বলে ক্রেতাদের ভুল বুঝিয়ে বেশি দামেও বিক্রি করা হয়ে থাকে, সেটা ঠিক নয়। ক্রেতাদের যাতে ভুল বুঝিয়ে মাছ বিক্রি না করা হয় তারজন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান জেলা মৎস্য আধিকারিক। এ নিয়ে প্রচারেও নামা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)