সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: উত্তরবঙ্গে হাতির ১৪টি বড় করিডর থেকে চা বাগানের কিছু অংশের গাছ সরিয়ে জঙ্গল তৈরির সিদ্ধান্ত নিল উত্তরবঙ্গ বন্যপ্রাণ বিভাগ। এই বিষয়ে পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে রেতির জঙ্গল থেকে মুর্তির জঙ্গলে যাবার করিডরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। রেতি-মূর্তি করিডোরের ডিপিআর তৈরি শুরু হচ্ছে। বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাতি, মানুষের সংঘাত কমাতে হাতিদের পুরনো রাস্তা পুনরুদ্ধার এই পদক্ষেপ ভূমিকা নেবে।
প্রতিবছর হাতি-মানুষের সংঘাতে প্রানহানি ঘটছেই। সংঘাত ঠেকাতে সচেতনার প্রচার সহ একাধিক পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে বনদপ্তরকে। দপ্তরের বক্তব্য, হাতির দল এক জঙ্গল থেকে অন্য জঙ্গলে যাবার সময় নির্দিষ্ট করিডর ব্যবহার করে। কিন্তু, করিডরগুলিতে কোথাও জন বসতি গড়ে উঠেছে, কোথাও আবার চা বাগান রয়েছে। ফলে বাধা পেয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে এদিক-ওদিক ঢুকে পড়ছে হাতির দল। ফলে লোকালয়ে সংঘাত বাড়ছে। রেললাইন পারাপারের সময় হাতিরা দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে। এই ধরনের ঘটনা এড়াতে হাতির পুরোনো করিডর উদ্ধারকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার উত্তরঙ্গের মুখ্য বনপাল জেভি ভাষ্কর জানালেন, হাতি-মানুষের সংঘাত কমাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাতির আক্রমণে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি, ফরেস্ট ভলেন্টিয়ার হিসেবেও নিয়োগ করা হচ্ছে। গতবছর রাজ্যে প্রায় ৪০০ জনকে এই পদে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া করিডরগুলি পুনরুদ্ধারে জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গে ১৪টি বড় করিডর আছে। এই করিডরগুলির অধিকাংশই চা বাগানের মধ্যে। যে কারণে করিডরে মাঝে থাকা চা গাছগুলি তুলে সেখানে গাছ লাগিয়ে জঙ্গলের মতো রাস্তা করে দেওয়া হবে। এজন্য বাগান কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। যদিও এর জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন।
মুখ্য বনপাল বলেন, একটি করিডর ঠিক করতে গেলে ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকার প্রয়োজন। কোথা থেকে ওই টাকা আসবে সেটাও দেখা হচ্ছে। তবে এই মুহুর্তে রেতি-মূর্তির করিডরকে প্রাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে ধরা হয়েছে। এই করিডরে তুলসিপাড়া, মাকরাপাড়া এবং গ্যারগেন্ডা চা বাগান রয়েছে।