• সন্দীপ-বিরোধিতা ন্যাশনালে,  চলবে আন্দোলন, ভোগান্তি অব্যাহত রোগীদের  
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে সন্দীপ ঘোষের নাম ঘোষণা হতেই গর্জে উঠেছিলেন পড়ুয়ারা। তাঁরা কিছুতেই সন্দীপকে অধ্যক্ষ হিসেবে মেনে নিতে চান না। যার জেরে মঙ্গলবার সারাদিন উত্তাল ছিল হাসপাতাল চত্বর। টানাপোড়েনের পর আপাতত ছুটিতে গিয়েছেন সন্দীপ। স্বপদে বহাল থাকছেন অজয় রায়ও। তবে আন্দোলন থামছে না। 

    এবিষয়ে মঙ্গলবার সকালে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলতে যান এলাকার বিধায়ক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান স্বর্ণকমল সাহা ও মন্ত্রী জাভেদ খান। পড়ুয়ারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ন্যাশনাল কোনও ডাম্পিং গ্রাউন্ড নয়। তাঁরা কিছুতেই সন্দীপকে অধ্যক্ষ হিসেবে মানবেন না। স্বর্ণকমল সাহা ও জাভেদ খান পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদেরও ‘গো ব্যাক’ স্লোগান শুনে ক্যাম্পাস ছাড়তে হয়। পড়ুয়ারা জানিয়ে দেন, সন্দীপ ঘোষকে তাঁরা অধ্যক্ষ পদে দেখতে চান না। বরং সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ অজয় রায়কেই চান তাঁরা। পরে জানা যায়, অজয় নিজ পদে ফিরছেন। সন্ধ্যায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া অরিম্পা সাহা ও শুভাশিস হাজরা সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘আবার অজয় রায় অধ্যক্ষ হিসেবে বহাল থাকছেন, এই সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।’ তাঁরা আরও জানান, মন্ত্রী ও বিধায়ক পরিস্থিতি জানার জন্য এসেছিলেন। আমাদের কথা ওঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলেছেন। আমরাও রোগীদের কাছে ফিরতে চাই। কিন্তু যতদিন পর্যন্ত না বিচার পাব, আমাদের আন্দোলন চলবে।’ সন্দীপ ঘোষ সংক্রান্ত নির্দেশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলে নেওয়ার দাবি করেন পড়ুয়ারা। তাঁকে যেন কোথাও কোনও পদে না রাখা হয়, সেই দাবিও রাখা হয়।      

    তবে আন্দোলনের জেরে রোগী ভোগান্তি পৌঁছল চরমে। ডলি মল্লিক এসেছিলেন ডায়মন্ডহারবারের সংগ্রামপুর থেকে। তিনি বলছিলেন, ‘আমার ছেলে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। এখান থেকে ওষুধ দেয়। গতকালও এসেছিলাম। আজও এলাম, ওষুধ পেলাম না। ৩০০ টাকা যাতায়াতে খরচ হচ্ছে।’ কেউ এসেছিলেন আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করতে, কেউ রিপোর্ট নিতে। সকলেই খালি হাতে ফিরে গেলেন। সকালে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ওপিডিতে রোগীর লম্বা লাইন চোখে পড়ে। বিভিন্ন বিভাগের সিনিয়র চিকিত্সক ও রেসিডেন্ট চিকিত্সকরাই ওপিডি সামলালেন। দুপুরের দিকে ইমার্জেন্সির সামনে ভাঙা পায়ে সাত বছরের ইমতিয়াজ গাজিকে দেখা গেল। তার মা ইন্নাহার বিবি বলছিলেন, ‘আমরা দক্ষিণ বারাসতের বাসিন্দা। ছেলে গাছ থেকে পড়ে গিয়ে পা ভেঙেছে। বৃহস্পতিবার থেকে ভর্তি। শনিবার অস্ত্রোপচার হল না। ডাক্তারবাবু বললেন, এক্স-রে করে দেখে ছেড়ে দেবে। কিন্তু এক্স-রে আজ হল না।’ যদিও পড়ুয়াদের দাবি, ইমার্জেন্সি ব্যবস্থা সচল রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)