• ইউটিউব থেকে ট্রেনের নম্বর জোগাড়, বোমাতঙ্ক  ছড়িয়ে ধৃত নামখানার যুবক
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: গত ৩০ জুলাইয়ের ঘটনা। পাঞ্জাবের ফিরোজপুর এলাকা দিয়ে ছুটে চলেছে জম্মু-আমেদাবাদ এক্সপ্রেস। স্থানীয় কাসুবেগু স্টেশনে সেই ট্রেন ঢুকতেই আচমকা বদলে গেল পরিস্থিতি। পুলিসে পুলিসে ছয়লাপ চারপাশ। যাত্রীদের নামিয়ে কামরায় কামরায় চলছে পুলিস ও প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে তল্লাশি। যাত্রীরা জানতে পারলেন, ট্রেনে নাকি বোমা রয়েছে! ওই স্টেশনে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ট্রেন দাঁড় করিয়ে রেখে তল্লাশির পর পুলিস নিশ্চিত হয় যে ট্রেনে কোনও বোমা নেই। ততক্ষণে ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়েছেন যাত্রীরা। তাহলে এই ভুয়ো বোমাতঙ্ক ছড়াল কে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে তদন্ত শুরু করে পাঞ্জাব রেল পুলিস। জানা যায়, প্রথমে রেলের সাধারণ হেল্পলাইনে এ সংক্রান্ত একটি ফোন আসে। ফোন করে এক ব্যক্তি একটি নির্দিষ্ট ট্রেনের নম্বর দিয়ে জানান, ওই গাড়িতে বোমা রয়েছে। নম্বর মিলিয়ে দেখা যায়, সেটি জম্মু-আমেদাবাদ এক্সপ্রেস। লোকেশন ট্র্যাক করে জানা যায়, ট্রেনটি তখন পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে রয়েছে। বিষয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করে একটুও দেরি করেনি পুলিস। যাত্রাপথের আসন্ন স্টেশনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি। পরবর্তী তদন্তে জানা যায়, ফোনটি এসেছে পশ্চিমবঙ্গের নামখানা থেকে। পাঞ্জাব রেল পুলিস তখন নামখানা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। সোমবার রাতে নামখানা থানার সহযোগিতায় পাঞ্জাব রেল পুলিস ভুয়ো বোমাতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগে জয়ন্ত প্রধান নামে স্থানীয় এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জানতে পারে, ইউটিউব ভিডিও দেখে তিনি ট্রেনের নম্বর জোগাড় করেছিলেন। তবে ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁর চিকিৎসাও চলছে। ধৃতের পরিবারের সদস্যরাও দাবি করেন, জয়ন্ত মানসিকভাবে অসুস্থ। ধৃতকে ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে মঙ্গলবার কাকদ্বীপ আদালতে তোলা হলে বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেন।  

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার সময় থেকেই মানসিকভাবে অসুস্থ জয়ন্ত। মানসিক রোগের হাসপাতালে রেখে তাঁর চিকিৎসা করানো হচ্ছিল। ২০১৯ সাল থেকে বাড়িতেই চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। তাঁর নিজের কোনও মোবাইল না থাকলেও পরিবারের কারও না কারও ফোনে তিনি ইউটিউবে নানা ধরনের ভিডিও দেখতেন। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় জয়ন্ত জানিয়েছেন, ইউটিউব ভিডিও থেকেই ওই এক্সপ্রেসের নম্বর পান তিনি। তারপর রেলের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে ওই ট্রেনে বোমা আছে বলে জানিয়ে দেন। পাঞ্জাব রেল পুলিসের আধিকারিক যশকরণ সিং বলেন, ‘এই এক ফোনের কারণে গত ৩০ জুলাই ওই এক্সপ্রেসকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়েছিল। ওই শাখার সামগ্রিক রেল পরিষেবাও ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়।’ জয়ন্তর ভাই প্রশান্ত প্রধান বলেন, ‘দাদা অনেকদিন ধরেই অসুস্থ। ও যে এমন কাজ করেছে, আমরা কেউ জানতাম না।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)