• মৃতার বাড়ির গলিতে হঠাৎ গার্ডরেল, পুলিসের ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন নাটাগড়ের
    বর্তমান | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: গলির মুখে গার্ডরেল। কেউ ঢুকতে গেলেই ঘিরে ধরছেন পুলিসকর্মীরা। খুন হওয়া চিকিৎসকের বাড়িতে যাচ্ছেন শুনলেই কার্যত রে রে করে উঠছেন তাঁরা। এমনকী, অনুমতি রয়েছে জানানোর পরও চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। সঙ্গে কোনও ব্যাগ রয়েছে কি না, থাকলে তাতে কী কী রয়েছে, তাও দেখাতে হচ্ছে কর্তব্যরত ওই পুলিসকর্মীদের। মঙ্গলবার দুপুরে সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ওই বাড়িতে যাওয়ার সময় এই কড়াকড়ি নিয়ে পুলিসের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। পুলিসের এই ‘অতিসক্রিয়তা’ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে পুলিসের দাবি, জাতীয় মহিলা কমিশনের পরামর্শ মেনেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। নিহত চিকিৎসকের পরিবারের তরফে অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। 

    মেইন রোড থেকে গলিরাস্তায় কিছুটা ঢুকলেই বাড়িটি চোখে পড়ে। গত কয়েকদিন ধরে প্রায় সারাক্ষণ এই বাড়ির সামনে সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক নেতা, চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের ভিড় লেগে রয়েছে। পরিবারের অনুমতি নিয়েই শোকগ্রস্ত মা-বাবা ও অন্যান্য আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করছেন বিভিন্ন প্রতিনিধি দলের সদস্য। গত কয়েকদিন পুলিসের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকত মূল রাস্তায়। কিন্তু সোমবার রাত থেকে গলির মুখ দু’টি গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। এক অফিসার সহ সাত পুলিসকর্মীকে মোতায়েন করা হয়। কেউ ওই গলিতে ঢুকতে চাইলে পুলিস আটকে দিতে শুরু করে। গলির অন্যান্য বাড়ির সদস্যদেরও এসব ঝামেলার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এই কড়াকড়ির মধ্যে কেউ যদি জানান যে তিনি ওই চিকিৎসকের বাড়িতে যাবেন, তখনই তাঁকে ছেঁকে ধরছে পুলিস। পরিবারের সদস্যের সঙ্গে পুলিসকে ফোনে কথা বলিয়ে দিতে হচ্ছে। ফোনে পরিবারের কেউ আগন্তুকের নাম শুনে অনুমোদন দিলে তবেই সেখান দিয়ে যাওয়ার অনুমতি মিলছে। 

    এই কারণে সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও পুলিসের বচসা বাধে এদিন বেলার দিকে। শেষ পর্যন্ত তিনি অবশ্য দলের কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে চিকিৎসকের বাড়িতে যান। আসেন রাজ্য মহিলা কমিশনের দুই প্রতিনিধিও। তাঁরা প্রায় আধঘন্টা কথা বলে বেরিয়ে আসেন। এই দলের সদস্য সুভদ্রা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে আছি।’ কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ও দেখা করেন পরিবারের সঙ্গে। অন্যান্য দিনের মতো এদিনও চিকিৎসকের বাড়ির সামনে দীর্ঘক্ষণ ঠায় বসে থাকতে দেখা যায় স্থানীয় বিধায়ক নির্মল ঘোষকে। বারাকপুর কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়েছে, জাতীয় মহিলা কমিশনের পরামর্শ মেনে এই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরাই এই নিরাপত্তা চাইছেন বলে কমিশন আমাদের জানিয়েছে। কারণ, প্রতিনিয়ত মানুষের আনাগোনা ও জমায়েতের কারণে বিব্রত বোধ করছেন পরিবারের সদস্যরা।
  • Link to this news (বর্তমান)