• হাসপাতালের সুরক্ষার ভার পুলিশকেই দেওয়ার ভাবনা
    এই সময় | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়: আরজি করের হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলির নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের হাতেই তুলে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তর সূত্রে এ কথা জানা গিয়েছে। এ জন্য কতজন বাড়তি পুলিশকর্মী লাগতে পারে, সে ব্যাপারে রিপোর্টও চেয়েছে নবান্ন। সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিকল্পনা করবে পুলিশ।বস্তুত, আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশেরও সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ও ডাক্তারি পড়ুয়াদের নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন-ও। এই কারণে হাসপাতালগুলিকে পলিসি তৈরি করতে বলেছে তারা। বলা হয়েছে, হাসপাতালের ওপিডি, লেবার রুম, হস্টেল ও চিকিৎসক-কর্মীদের আবাসনে নিরাপত্তার উপরে জোর দিতে হবে।

    হাসপাতালের ভিতরে কোনও ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলে তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশনকে রিপোর্ট পাঠাতে হবে বলেও দেশের হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিশনের নির্দেশ, অপরাধমূলক যে কোনও ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে এফআইআর করতে হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

    এই প্রেক্ষাপটে সক্রিয় রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরও। সমস্ত সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা জোরদার করতে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি চত্বর জুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। সূত্রের খবর, নবান্ন থেকেই সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ গিয়েছে। এই দায়িত্ব দেওয়া হবে ওয়েবেলকে। নিরাপত্তায় খামতি কোথায়, তা চিহ্নিত করতে একটি করে সুরক্ষা কমিটি গড়া হবে।

    কমিটিতে পুলিশ-আধিকারিকদের পাশাপাশি পূর্ত ও সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের প্রতিনিধিরা থাকবেন। কমিটির সুপারিশ মেনে হাসপাতালের সুরক্ষা-ব্যবস্থার খোলনলচে বদলানো হবে বলে জানা গিয়েছে। কাজ শুরু করার জন্য হসপিটাল-পিছু ৫ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর।

    নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশকে দেওয়ার ভাবনা কেন? নবান্নের এক শীর্ষকর্তার ব্যাখ্যা — এখন সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দেখেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাইরের নিরাপত্তা দেখে পুলিশ। তাই সমস্ত বড় সরকারি হাসপাতালে পুলিশের আউট পোস্ট রয়েছে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ না ডাকলে পুলিশ কখনই ভিতরে ঢোকে না।

    অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন মূলত বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা। এই ব্যবস্থায় যথেষ্ট ফাঁক রয়েছে বলে মনে করছে নবান্ন। অনেক ক্ষেত্রেই বেসরকারি নিরাপত্তা এজেন্সির কর্মীরা ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করেন না বলে অভিযোগ। সেই সুযোগে হাসপাতালের ভিতরে যখন-তখন বাইরের লোকজন ঢুকে পড়ে। নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের হাতে থাকলে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ আটকানো যাবে বলে মনে করছে নবান্ন।

    আরজি কর হাসপাতালের মধ্যেই কর্তব্যরত এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে আন্দোলনে নেমেছেন বহু চিকিৎসক। তাঁরা সরকারের কাছে যে সব দাবিদাওয়া রেখেছেন, তারই অন্যতম হলো নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। ঘটনার পরে আরজি করের প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে জায়গায় এসেছেন সুহৃতা পাল। মঙ্গলবার সকালে তিনি কাজে যোগ দেন। দায়িত্ব নিয়েই সুরক্ষা কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন।
  • Link to this news (এই সময়)