একাধিক সরকারি হাসপাতালে বন্ধ ওপিডি, ব্যাহত চিকিৎসা পরিষেবা
এই সময় | ১৪ আগস্ট ২০২৪
হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ থাকায় রাজ্য জুড়ে সরকারি হাসপাতালগুলিতে অচলাবস্থা। কোথাও বন্ধ বহির্বিভাগের সামনে সিঁড়িতে বসে রোগী দেখার কাজ চলছে, কোথাও হাসপাতালে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী বহির্বিভাগ। দিনভর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগী ও তাঁর পরিজনদের। তবে পরিষেবা সচল রাখতে বেশিরভাগ জায়গাতেই সামাল দিলেন সিনিয়র চিকিৎসকরা।আরজি করকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্যের সব হাসপাতালের বহির্বিভাগে পরিষেবা বন্ধের ডাক দিয়েছে চিকিৎসক সংগঠন। বুধবার গোটা রাজ্যে সব ক’টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ওপিডি পরিষেবা বন্ধের ডাক দেওয়া হয় রাজ্যের জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস সংগঠনের তরফে। হাসপাতালে জরুরি নয় এমন সব পরিষেবাও বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে।
মহিলা চিকিৎসক মৃত্যুর প্রতিবাদে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা। সেই আন্দোলনের আঁচ গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। সমস্ত সরকারি হাসপাতালে ধাপে ধাপে শুরু হয় কর্মবিরতি। এর মাঝেই মঙ্গলবার সমস্ত হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় চিকিৎসক সংগঠন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকেলেই আরজি করের বক্ষরোগ বিভাগে সেমিনার হলের উল্টো দিকের ঘর ভাঙা হয়েছে। চিকিৎসক সংগঠনের সন্দেহ, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হতে পারে। জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস-এর তরফে দাবি করা হয়, এই কারণেই বুধবার আট ঘণ্টা অর্থাৎ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টে পর্যন্ত রাজ্যের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরি নয় এমন পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। ডাক্তারদের ব্যক্তিগত চেম্বারও বুধবার ওই আট ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা হয়।
বুধবার সকাল থেকেই রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিত্রটা ছিল একই। হুগলি জেলায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে বহির্বিভাগের লিফটের সামনে বসেই চিকিৎসা পরিষেবা দেন চিকিৎসকরা। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্ক মৌলি কর বলেন, ‘ওপিডি চলছে, চিকিৎসকরা পরিষেবা দিচ্ছেন। কিছু কিছু ঘর বন্ধ রয়েছে, কিছু চিকিৎসকরা এক জায়গায় বসে দেখছেন। কাউকে ফেরানো হচ্ছে না।’ নদিয়া জেলার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল। হাসপাতালের পেছনের অংশে একটি অস্থায়ী বহির্বিভাগ চালু করা হয়। বাঁকুড়া থেকে বীরভূম, শিলিগুড়ি থেকে মুর্শিদাবাদ সব জেলাতেই চিকিৎসক সংগঠনের ডাকা কর্মবিরতির প্রভাব পড়ে। দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।
একাধিক জায়গায় ভোগান্তির কথা জানালেন রোগীরা। চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে কুন্তীঘাট থেকে কিডনির সমস্যা নিয়ে আসা রোগী আলো মণ্ডল বলেন,’অনেক দূর থেকে হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা করাতে এখন দেখছি ডাক্তার আসেনি। লাইনে দাঁড়িয়ে মাথা ঘুরছিল একজন চেয়ার দেয় বসার জন্য। সমস্যায় পড়ছি আমরা।’ বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের আউটডোর বিভাগে দাঁড়িয়ে এক রোগী জয়া সর্দার বলেন, ‘আজকে চিকিৎসা করাতে এসেছিলাম। ওপিডি বন্ধ বলছে। শুক্রবার আসতে বলা হয়েছে।’