• পরিষেবা নিচু মানের, রেলের এক্স হ্যান্ডলে জানিয়ে কী লাভ? হুঁশিয়ারি আইনজীবীর
    এই সময় | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়: এসি চেয়ার কার। ভাগীরথী এক্সপ্রেসের সি-টু কামরা। উঠেই মেজাজটা খিঁচড়ে গিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী অরিন্দম দাসের। প্রায় চার ঘণ্টা এই পুরোনো লড়ঝড়ে কামরায় বসে শিয়ালদহ থেকে মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত যেতে হবে! উইন্ডো ম্যাট ছেঁড়া। সিটের সামনের ট্রে-গুলো যে কোনও সময়ে খুলে পড়ে যাবে। বসতে গিয়ে তো রীতিমতো বিপদেই পড়ছিলেন তিনি।সিটের ব্যাকরেস্ট হুড়মুড় করে পিছন দিকে পড়েই গেল। টিকিট পরীক্ষককে ডেকে সেটা দেখানোর পরেও যে খুব সুবিধে হলো, তা নয়। টিটিই (ট্র্যাভেলিং টিকিট এগজ়ামিনার) বলে দিলেন, ‘একটা ভালো সিট খুঁজে নিয়ে বসে পড়ুন না!’ তবে কিছুক্ষণ পর যাত্রী অরিন্দমের ধৈর্যচ্যুতি ঘটল। তিনি অভিযোগ নথিবদ্ধ করলেন ভারতীয় রেলের এক্স হ্যান্ডলে।

    কিন্তু তার পর?

    অরিন্দম বলছেন, ‘গত শনিবার, ১০ অগস্ট শিয়ালদহ-লালগোলা ভাগীরথী এক্সপ্রেসের সি-টু কামরার ৩৪ নম্বর সিটে যাওয়ার সময়ে আমার অত্যন্ত হতাশাজনক অভিজ্ঞতা হয়। রেলের এক্স হ্যান্ডলে আমি অভিযোগ করার পর আমার সঙ্গে রেল যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু কাজ কিছু হয়নি।’

    হাইকোর্টের ওই আইনজীবী একা নন। এই রকম ক্ষেত্রে ‘কাজ না-হওয়ার’ অভিযোগ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বহু যাত্রীরই। ভাগীরথী এক্সপ্রেস তো বটেই, অভিযোগ রয়েছে দেশের সব চেয়ে নামী-দামি ট্রেন রাজধানী এক্সপ্রেস নিয়েও। রাজধানী ও শতাব্দী এক্সপ্রেসের মতো প্রিমিয়াম ট্রেনে নিম্নমানের খাবার দেওয়া নিয়ে অসংখ্য বার নালিশ জানিয়েছেন, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বহু যাত্রী।

    একটা সময়ে রাজধানী এক্সপ্রেসের নিয়মিত যাত্রী ছিলেন দেবাশিস চৌধুরী। সেই দেবাশিস বলছেন, ‘একবার দেখি, টয়লেটের এত খারাপ অবস্থা যে, ঢোকা যাচ্ছে না। ওটাই শেষ বার। আর কখনও রাজধানী এক্সপ্রেসে চাপিনি।’ আর একটা ঘটনা। ট্রেন চলতে শুরু করা মাত্রই হাওড়া-কালকা নেতাজি এক্সপ্রেসের এসি-টু টিয়ার কামরার একটা পাল্লা খুলে গিয়েছিল। আর বন্ধ হয়নি। ওই দরজার ঠিক পাশের চারটি বার্থের যাত্রীরা রেলের এক্স হ্যান্ডলে আলাদা আলাদা অভিযোগ করেন।

    কয়েক জন রেলকর্মী একবার ব্যাপারটা দেখতে এসেছিলেন। তবে ও টুকুই। সমস্যার সমাধান হয়নি। গোটা পথ ওই ভাবেই যেতে হয়েছিল যাত্রীদের। তবে ভারতীয় রেলের এক্স হ্যান্ডলে অভিযোগ করে বিভিন্ন সমস্যার দ্রুত সমাধান পাওয়ার কথাও স্বীকার করেছেন যাত্রীদের একটা বড় অংশ। একই সঙ্গে তাঁরা অবশ্য জানাচ্ছেন, দূরপাল্লার ট্রেনে সামগ্রিক ভাবে পরিষেবার মান অনেকটাই পড়েছে।

    ভাগীরথী এক্সপ্রেসে সদ্য তিক্ত অভিজ্ঞতা যাঁর হয়েছে, সেই অরিন্দম দাস বলছেন, ‘রেল একটা পরিষেবা বিক্রি করে। আমরা টাকার বিনিময়ে সেই পরিষেবা কিনি। যদি টাকা দেওয়ার পরেও পরিষেবা না-পাই, তা হলে অন্য ব্যবস্থা দেখতে হবে।’ পেশায় আইনজীবী অরিন্দম জানিয়েছেন, তিনি শিয়ালদহ ডিআরএম অফিসে ই-মেল করে অভিযোগ জানিয়েছেন। সাত দিনের মধ্যে রেল কোনও ব্যবস্থা না-নিলে তিনি আইনি পদক্ষেপ করবেন।
  • Link to this news (এই সময়)