একটানা বিক্ষোভের মাঝে হাসপাতালে স্বাভাবিক পরিষেবা, রোগী দেখেছেন সিনিয়র ডাক্তাররা
এই সময় | ১৪ আগস্ট ২০২৪
এই সময়, আরামবাগ, চুঁচুড়া ও হাওড়া: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যে। আন্দোলনে সামিল হয়েছেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে সেই আন্দোলন শুধু আরজি করের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে।মঙ্গলবারও আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ, উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ, হাওড়ার মহেশ ভট্টাচার্য হোমিয়োপ্যাথি কলেজে বিক্ষোভ দেখান জুনিয়র ডাক্তাররা। চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের ওপিডিতেও প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়। চলে কর্মবিরতিও। কিন্তু পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। সিনিয়ার ডাক্তাররা পরিস্থিতি সামাল দেন।
মঙ্গলবার আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পোস্টার-ব্যানার নিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু রোগীদের কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি। তাঁরা ঠিকঠাক পরিষেবা পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা অভিযোগ তোলেন, প্রকৃত অপরাধীকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে।
দ্রুত দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। মৃত চিকিৎসক যেন সঠিক বিচার পান। পাশাপাশি সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি তোলেন জুনিয়ার ডাক্তাররা। আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ রায় বলেন, ‘আরজি করের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। সেখানে দীর্ঘদিন আমি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছি। আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। সব ওয়ার্ডের নিরাপত্তা আরও ভালো করা হচ্ছে। এখানকার জুনিয়র ডাক্তাররা প্রতিবাদ করছেন। এক-দু’দিন ধর্মঘট করবে বলে খবর পেয়েছি। পরিষেবা স্বাভাবিক আছে। রোগীদের কোনও সমস্যা হয়নি।’
ইমামবাড়া হাসপাতালে ওপিডিতে কাজ বন্ধ করে দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। যদিও সিনিয়ার ডাক্তাররা পরিষেবা চালু রেখেছেন। এ দিন ১১টা থেকে ১২টা পেন ডাউন করে প্রতিবাদ করেন হাসপাতালের সব চিকিৎসক। কালো ব্যাচ পরে আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসকের হত্যার বিরুদ্ধে সরব হন চিকিৎসকরা। তাতে যোগ দেন নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও।
হাসপাতালের চিকিৎসক পার্থ ত্রিপাঠি বলেন, ‘এমন অপরাধের প্রতিবাদ না হলে মানুষ হিসেবে আমাদের লজ্জা। রাজ্যের প্রশাসন একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু আমাদের ধারণা, আরও কেউ জড়িত। তাঁদের আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। আজ পেন ডাউন হয়েছে। আগামী দিনে আরও বড় পদক্ষেপ করতে হবে।’ জুনিয়র ডাক্তার দীপান্বিতা দাস বলেন, ‘যে সংস্থাই তদন্ত করুক। আমরা বিচার চাই। যত দেরি হবে তথ্য প্রমাণ নষ্ট হবে।’
হাওড়া মহেশ ভট্টাচার্য হোমিয়োপ্যাথি কলেজ এবং হাসপাতালে পড়ুয়ারা লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। সোমবারের পর মঙ্গলবারও ধর্না ও কর্মবিরতি ছিল জুনিয়র ডাক্তারদের। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে হাসপাতালের গেটের সামনে অবস্থানে বসেন তাঁরা। জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি তোলেন।