• বগটুই গণহত্যা কাণ্ডে ঘুরল মোড়‌, অভিযুক্তদের আদালতে চিনতে পারলেন না স্বজনহারারা
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৪ আগস্ট ২০২৪
  • বীরভূমের বগটুই গণহত্যা দু’‌বছর আগে সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছিল। আর দু’‌বছর পর সাক্ষ্যগ্রহণ পর্বে বগটুই গণহত্যা মামলার মোড় ঘুরে গেল। সোমবার এবং মঙ্গলবার রামপুরহাটের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে সাক্ষ্যগ্রহণ ছিল। আর সেখানে হাজিরা দিতে এসে স্বজনহারারা অভিযুক্তদের চিনতেই পারলেন না। আর এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সোমবার স্বজনহারা তিন ভাই সাক্ষী দিতে আসেন। কিন্তু তাঁরা এজলাসে ঢুকে অভিযুক্তদের চিনতে পারেননি। মঙ্গলবারও আদালতে একই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনা দেখে অবাক সিবিআই। সিবিআইয়ের প্রশ্ন, কোথাও কি কোনও ‘রফা’ হয়েছে?

    এই স্বজনহারারাই অভিযোগ করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়। বগটুই হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। ২০২২ সালের ২১ মার্চ রাতে রামপুরহাট থানার ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা উপপ্রধান ভাদু শেখকে। ওই রাতেই ভাদু শেখের অনুগামীরা বগটুইয়ের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তার জেরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তখন অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ছিলেন স্বজনহারারা। তাতেই গ্রেফতার হতে হয় কয়েকজনকে। এখন এই স্বজনহারারা চিনতেই পারলেন না অভিযুক্তদের!‌

    বগটুই গণহত্যার দু’বছর কেটে গিয়েছে। সিবিআইও তদন্ত করে চলেছে। স্বজনহারা পরিবারের সদস্য ফটিক শেখ, মিহিলাল শেখরা এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এই ঘটনার ফায়দা তুলতে বগটুই হত্যাকাণ্ডের বর্ষপূর্তিতে বিজেপির পক্ষ থেকে গ্রামে শহিদ বেদিও নির্মাণ করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পাল্টা শহিদ বেদি তৈরি করা হয়েছে। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বগটুই গ্রাম থেকে বিজেপির হয়ে স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে হেরে যান। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মিহিলাল শেখ ছাড়া অন্যান্য স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা আবার তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকেছেন বলে খবর।

    এই আবহে স্বজনহারা পরিবারের তিন সদস্য নেকলাল শেখ, ফটিক শেখ এবং খুশি খাতুন অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সন্দীপ কুন্ডুর এজলাসে সাক্ষ্য দিতে আসেন। কিন্তু অভিযুক্তদের চিনতে পারেননি। সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থ তপস্বী বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে যান। তাই এই তিনজন সাক্ষীকে ‘বিরূপ’ বলে দাবি করেছেন। সোমবার ২৩ অভিযুক্তদের মধ্যে ১৪ জন এজলাসে ছিল। আর মঙ্গলবার ২৩ জনই ছিল। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থ তপস্বীর দাবি, ‘ওঁদের কিছু লোক ভাদু শেখ খুনের মামলায় জড়িত। তাই ওঁদের মধ্যে গ্রামে সমঝোতা হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। সাক্ষীদের চাপ দেওয়া হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছি।’
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)