ডিসেম্বরেই কি গৃহস্থের ঘরে পাইপ গ্যাস সরবরাহ শুরু? আশাবাদী রাজ্য
এই সময় | ১৫ আগস্ট ২০২৪
কৌশিক প্রধান (Exclusive Copy)
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। সব জট কাটিয়ে দুর্গাপুর থেকে নদিয়ার গয়েশপুর পর্যন্ত গ্যাসের পাইপলাইন বসানোর কাজ অবশেষে শেষ করেছে গেইল। ওই পাইপলাইন দিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গয়েশপুর পর্যন্ত প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ চালু করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থাটি।ডিসেম্বরে কল্যাণীতে গৃহস্থের রান্নাঘর ও কল-কারখানায় পাইপ গ্যাস সরবরাহ চালু করার ব্যাপারে আশাবাদী গেইল ও রাজ্য সরকারের গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশনের যৌথ সংস্থা বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি। আগামী মার্চে চন্দননগর ও সন্নিহিত এলাকার বাসিন্দাদের পাইপ গ্যাস দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে সংস্থাটি।
কলকাতা ও তার আশেপাশে পাইপে রান্নাঘর ও কল-কারখানায় প্রাকৃতিক গ্যাস বা পিএনজি এবং গাড়ির জ্বালানি সিএনজি সরবরাহের দায়িত্বেও রয়েছে এই সংস্থা।
বেঙ্গল গ্যাস-এর সিইও অনুপম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘দুর্গাপুর থেকে গয়েশপুরের পাইপলাইন বসানোর পরে তার নেটওয়ার্কের টেস্টিং ও ক্লিনিং হবে। তার পরে পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস রেগুলেটারি বোর্ড ও পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভস সেফ্টি অর্গানাইজ়েশন অনুমোদন দিলেই পাইপের মধ্যে দিয়ে গ্যাস সরবরাহ চালু হয়ে যাবে।’
পূর্ব বর্ধমানের একটা জায়গায় ২৫০ মিটার মতো বসানো বাকি ছিল গেইলের এই পাইপলাইন। গলসির বাবলা গ্রামের কিছু বাসিন্দাদের বাধায় গত কয়েক মাস কাজ আটকে ছিল। ৩১ জুলাই নবান্নে মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকার সঙ্গে বৈঠক করেন গেইলের চেয়ারম্যান সন্দীপ গুপ্তা ও ডিরেক্টর (প্রোজেক্টস) দীপক গুপ্তা। তার পরেই জট কাটে। সূত্রের খবর, দিন ছয়েক আগে ওই ২৫০ মিটার পাইপলাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।
এ বার বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি গয়েশপুর থেকে কলকাতা পর্যন্ত পাইপ বসিয়ে গ্যাস আনবে। গয়েশপুর থেকে তাদের আরও একটি পাইপলাইন যাবে গঙ্গা পেরিয়ে চন্দননগর ও তার সংলগ্ন এলাকায়। অনুপম জানিয়েছেন, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গয়েশপুর পর্যন্ত পাইপ গ্যাস চলে এলেও, পাইপের মাধ্যমে তা সাধারণ মানুষের রান্নাঘর, কলকারখানা ও সিএনজি স্টেশনে দিতে আরও কয়েক মাস লাগবে।
তাঁর ব্যাখ্যা, ‘গয়েশপুর থেকে কল্যাণী পর্যন্ত মেইন পাইপলাইন আমরা ইতিমধ্যেই বসিয়ে ফেলেছি। কল্যাণী শহরে গ্যাস সরবরাহে ব্রাঞ্চ পাইপলাইন বসাতে হবে। স্থানীয় পুরসভার থেকে সেই অনুমতি দ্রুত পেলে ডিসেম্বরে কল্যাণী শহরের রান্নাঘরে পাইপ গ্যাস পৌঁছবে। চন্দননগর ও তার আশেপাশে ব্রাঞ্চ পাইপলাইন বসানোর কাজ চলছে। আগামী মার্চের মধ্যে চন্দননগরে পাইপ গ্যাস সরবরাহ শুরু করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’
গেইলের পাইপলাইনের মাধ্যমে গয়েশপুর পর্যন্ত গ্যাস চলে এলে কলকাতা ও তার আশেপাশে গাড়ির জ্বালানি সিএনজি-র জোগান অনেকটাই বাড়বে। এখন পানাগড় থেকে ট্যাঙ্কারে করে গ্যাস নিয়ে তা বৃহত্তর কলকাতার সিএনজি স্টেশনগুলিতে সরবরাহ করে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি। পানাগড় থেকে ট্যাঙ্কার কলকাতায় আসতে ৬-৭ ঘণ্টা লাগে। তার উপর চাহিদার পুরোটা সরবরাহও করা যায় না।
অনুপম বলেন, ‘এখন রোজ সিএনজি-র চাহিদা ২৫ টনের মতো। আমরা দিতে পারছি ১৭ টন। গয়েশপুর পর্যন্ত পাইপ গ্যাস চলে এলে আমরা চাহিদার পুরোটা সরবরাহ করতে পারব।’ সিএনজি স্টেশনগুলিতে গাড়িগুলির দীর্ঘ লাইন আর থাকবে না। কল্যাণীতে ইতিমধ্যেই একটি মাদার স্টেশন তৈরি হয়েছে।
ভাটপাড়ার কাছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে-তে আরও একটি মাদার স্টেশনের নির্মাণ শুরু হয়েছে। কলকাতা পর্যন্ত পাইপলাইন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এই দু’টি মাদার স্টেশন থেকেই ট্যাঙ্কারে করে সিএনজি স্টেশনগুলিতে গ্যাস সরবরাহ করা হবে বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।