• বর্ধমান মেডিক্যালে সিজার করে আড়াই ফুট প্রসূতির সন্তান প্রসব
    বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: স্বপ্ন পূরণ হল। সৌজন্যে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। আড়াই ফুট উচ্চতার সীমাকে(নাম পরিবর্তিত) কয়েক মাস আগে তাঁর স্বামী কোলে তুলে হাসপাতাল আনেন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়ও তিনি স্ত্রীকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। চিকিৎসকরা দেখে অবাক হন। তাঁদের ডেকে আলাদাভাবে কথা বলেন। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করার পর জানিয়ে দেন সীমা অন্তঃসত্ত্বা। দম্পতির মুখে হাসি ফোটে। কিন্তু চিকিৎসকরা চিন্তায় পড়ে যান। এত কম উচ্চতার ওই যুবতীর কীভাবে সিজার করা যাবে? বিষয়টি তাঁরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন। সীমার স্বামী নিয়ম করে তাঁকে পূর্বস্থলীর জামালপুর থেকে চিকিৎসা করতে নিয়ে আসেন। প্রতিবারই তাঁকে তিনি কোলে তুলে আনেন। কয়েক মাস ধরে এই রুটিন চলার পর মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসকরা সফল অপারেশন করেন। সীমা পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সদ্যোজাত এবং মা দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন। 

    বর্ধমান মেডিক্যাল হাসপাতালের এমএসভিপি তাপস ঘোষ বলেন, যথেষ্ট ঝুঁকির অপারেশন ছিল। চিকিৎসকদের পরিশ্রম সফল হয়েছে। ওই মহিলা হাঁটতে পারেন না। উচ্চতা কম, ওজনও কম ছিল। পুরো অপারেশনে একটা টিম কাজ করেছে।

    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক মলয় সরকার, সৌমেন মণ্ডল, সীমান্ত ঘোষ মল্লিক সহ কয়েকজন এই অপারেশনে যুক্ত ছিলেন। ওই প্রসূতির স্বামী বলেন, চিকিৎসকদের সহযোগিতা কোনওদিন ভুলব না। সবসময় উৎসাহ জোগাতেন। স্ত্রীকে যত্ন সহকারে দেখেছেন। ওকে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলত। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। স্ত্রীর মনোবলও ঠিক ছিল।

    অন্যান্য মেডিক্যাল হাসপাতালের মতো বর্ধমানেও জুনিয়র চিকিৎসকরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। অনেক রোগী ফিরেও যাচ্ছেন। সেসময় সিনিয়র চিকিৎসকদের সফল অপারেশন নজর কেড়েছে। তাঁরা বলেন, অপারেশন সময়ে না করা গেলে সাফল্য আসত না। বর্ধমান মেডিক্যাল হাসপাতালে এ ধরনের অপারেশন প্রথম। কিছুদিন চেকআপে রাখার পর ছুটি দেওয়া হবে। ওই মহিলার স্বামী বলেন, স্ত্রীর স্বপ্ন ছিল মা হওয়ার। তা পূরণ হয়েছে। আমার দীর্ঘদিনের পরিশ্রম সফল হয়েছে। সবকিছু সম্ভব হয়েছে চিকিৎসকদের জন্য।

    চিকিৎসকরা বলেন, ওঁর স্বামী অনেক কষ্ট সত্ত্বেও বিরক্ত হননি। হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকতেন। সদ্যোজাত ওদের মুখের হাসি আরও চওড়া করেছে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)