• স্বাধীনতা দিবসে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে নলহাটি উদয়ন সঙ্ঘ
    বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ১৯০০ থেকে ১৯৪৭ সালের মধ্যে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম পুরোদমে শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুটবল প্রতিরোধের একটি প্রাসঙ্গিক হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল। দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু এখনও প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসে মানুষকে উজ্জীবিত হওয়ার বার্তা দিতে ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে নলহাটির উদয়ন সঙ্ঘ।

    ১৯৭২ সালের ১৫ আগস্ট এলাকার কয়েকজন মিলে ক্লাব গড়ে তোলেন। নাম দেওয়া হয় উদয়ন সঙ্ঘ। মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল নিয়মিত ফুটবল খেলার চর্চা ও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া। পরে অবশ্য মানব সেবার পাশাপাশি এলাকায় দুর্গাপুজোর আয়োজন করে আসছে তারা। যা নলহাটি শহরের মধ্যে এক অন্য পরিচিতি দিয়েছে এই ক্লাবকে। প্রায় ৫০ বছর ধরে তাঁরা স্বাধীনতা দিবসের দিন ফুটবল খেলার আয়োজন করে আসছে। আগে শতাধিক টিম নিয়ে খেলা হতো। কিন্তু এববছর ঝাড়খণ্ড, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, বোলপুর সহ বিভিন্ন জায়গার ১৬টি দল নিয়ে লিগ ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। ১৪ ও ১৫ আগস্ট দু’দিন ধরে চলবে এই প্রতিযোগিতা। ১৫ আগস্ট সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত, শহিদদের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও বিশিষ্টজনেরা স্বাধীনতার ইতিহাস বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরে যুব সমাজকে দেশপ্রেমে জাগ্রত করে তোলার চেষ্টা করেন। এলাকার বহু মানুষ তাতে যোগ দেন। ফাইনাল খেলায় জয়ী ও পরাজিত টিমের হাতে নির্দিষ্ট অর্থ ও ট্রফি তুলে দেওয়া হবে। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগে সেরাদের পুরস্কৃত করা হবে। দু’দিন এই ক্লাব চত্বর জমজমাট হয়ে ওঠে। বসে দোকানপাট। সেই সঙ্গে মাইকে বেজে চলে দেশাত্মবোধক গান। এক উৎসবের চেহারা নেয় এলাকা। 

    ক্লাবের সভাপতি রূপেশ ফুলমালি ও সম্পাদক অসিত ফুলমালি বলেন, দেশপ্রেম মানে তো শুধু সীমান্তে গিয়ে যুদ্ধ করা নয়, নানাভাবে দেশপ্রেম জাগ্রত হয়। তাঁরা বলেন, দেশের প্রতিটি জেলার গ্রামগঞ্জে এক যুগ আগেও পাড়ায় পাড়ায় ছিল খেলার জন্য উন্মুক্ত স্থান। কিন্তু সেখানে আজ সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপ। বর্তমানে স্কুল-কলেজ ছাড়া মাঠ তেমন চোখেই পড়ে না। তাইতো তারুণ্যের প্রতিভা টিনের ঘর কিংবা চার দেওয়ালেই বন্দি থাকে। এখন মাদকে পুড়ছে বর্তমান প্রজন্ম। খেলার জায়গা সংকুচিত হওয়ার কারণেই আজ তরুণরা ছুটছে কালো অধ্যায়ের দিকে। যুদ্ধ যেমন মানুষকে মুক্তি দেয়, ঠিক তেমনই খেলাধুলাও সমাজকে মুক্তি দেয়। যে সমাজে পর্যাপ্ত খেলাধুলার জায়গা আছে, সেই সমাজের তরুণরা কখনও সমাজের বোঝা হয়ে দাঁড়ায় না। বরং তরুণরা গড়ে তোলে এক আলোকিত সমাজ। এই বার্তা দিতেই দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে ফুটবল খেলার আয়োজন করে আসছে উদয়ন সঙ্ঘের সদস্যরা। তাঁদের উদ্যোগে ক্লাবের সামনে গড়ে তোলা হয়েছে শিব মন্দির। প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলিতে সেই শিব মন্দিরে বহু মানুষের ঢল নামে। ক্লাব সদস্য নারায়ণ ফুলমালি, মেঘনাথ দাস, সৌরভ কর্মকার, দিব্যেন্দু দাসরা বলেন, প্রতি সোমবার প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষকে পাত পেড়ে খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানো হয়। • নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)