• রানাঘাটে ৩০ বিঘা জমির ফসল নষ্ট করেছে দুষ্কৃতীরা
    বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: রাতের অন্ধকারে প্রায় ৩০ বিঘা জমির ফসল নষ্ট করে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার গভীর রাতে রানাঘাট থানার হরচন্দ্রপুর গ্রামে এঘটনা ঘটেছে। প্রায় ৩৬জন চাষি সকালে নিজেদের জমিতে এসে কার্যত উজাড় হওয়া মাঠ দেখতে পান। ব্যাপক লোকসানের চিন্তায় তাঁদের মাথায় হাত পড়েছে। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটাল? উত্তর খুঁজতে তদন্তে নেমেছে রানাঘাট থানার পুলিস।

    হরচন্দ্রপুর গ্রামের চাষি আবুল কাশেম মণ্ডল কয়েক বিঘা জমিতে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করেন। প্রতি বছরের মতো এবারও প্রচুর টাকা ধার করে রজনীগন্ধার চারা রোপণ করেছিলেন। এমনিতেই দামি ফুল। তাই দেনার অঙ্ক নেহাত কম ছিল না। দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের পর গাছে ফুলও ধরেছিল। মাসখানেকের মধ্যে গাছ কাটাও যেত। কিন্তু বুধবার সকালে গাছের পরিচর্যা করতে এসে তিনি দেখেন, বিঘার পর বিঘা জমি উজাড় হয়েছে। ফুল বেচে লাভ করা তো দূরের কথা, দেনার টাকা শোধ করার মতো গাছও অবশিষ্ট নেই। মাঠের মধ্যেই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন আবুল কাশেম। তিনি ছাড়া আরও প্রায় ৩৫জন চাষির সঙ্গে এঘটনা ঘটেছে। তাঁদের জমিতেও কেউ বা কারা ফসল নষ্ট করে দিয়েছে।

    আবুল কাশেমের ঠিক পাশেই আলাউদ্দিন দপ্তরির জমি। তিনি বলেন, আমার রজনীগন্ধা, গাঁদা আর পটলের চাষ ছিল। ফুলগুলি স্টিক ধরে ধরে কেটে দিয়ে গিয়েছে। পটলগাছ গোড়া থেকে কেটে দিয়েছে। রাতের অন্ধকারে কেউ এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। এখন কী হবে-বুঝতে পারছি না। রজনীগন্ধা চাষে ১ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। বিঘা প্রতি গাঁদায় ৪০ হাজার এবং পটল চাষে ৩০হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। সবমিলিয়ে, আমার একারই কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পুলিসকে সব জানিয়েছি।

    মাটিকুমড়া মৌজার এক চাষি বলেন, আমাদের এলাকার বেশিরভাগ মানুষ কৃষিনির্ভর। চাষের জমি এভাবে কেউ লণ্ডভণ্ড করবে কেন, সেটাই বুঝতে পারছি না। আমার সমস্ত গাঁদাগাছ উপড়ে দিয়েছে। পটল খেতেরও অনেক ক্ষতি হয়েছে। সবই ধারদেনা করে লাগিয়েছিলাম। এখন আর সেই টাকা শোধ করার ক্ষমতা নেই।

    খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রানাঘাট থানার পুলিস। তারা ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বয়ান নথিভুক্ত করেছে। একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে কে বা কারা এই ঘটনা ঘটাল, তা নিয়ে এখনও তদন্তকারীরা নিশ্চিত নন। তবে তাঁরা জানান, ঘটনায় যুক্তদের তাড়াতাড়ি ধরা হবে। চাষিদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)