• নবদ্বীপ পোড়ামাতলায় ছাউনির ঘেরাটোপে দেশনায়কের মূর্তি
    বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৪
  • সমীর সাহা, নবদ্বীপ: হৃদয়ে তিনি, তবুও সারা বছর কেমন আাড়ালে আবডালে ঢাকা পড়ে থাকেন, তিনি দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র। দেশবাসীকে শৃঙ্খলা মুক্ত করতে যার সবচেয়ে বড় অবদান, তাঁকে যেন শুধুমাত্র ১৫ আগস্ট, ২৩ জানুয়ারি এবং ২৬ জানুয়ারিতে দেখতে পাওয়া যায়। এই তিনটি দিন নবদ্বীপ পোড়ামাতলায় এই  দেশনায়ক নেতাজির আবক্ষ মূর্তি দেখার সুযোগ মেলে সাধারণ মানুষের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এখানে দেশনায়কের মূর্তি যেভাবে সারা বছর ঢাকা পড়ে থাকে, তা সত্যিই ভাবা যায় না। দোকানের ছাউনি আর ত্রিপলের ঘেরাটোপে মূর্তিটি এমনভাবে থাকে যে বোঝায় যায় না, ওখানে কোনও মূর্তি আছে। কারও কোনও হুঁশ নেই। ব্যবসাই যেন শেষ কথা। তাই দাবি উঠেছে,অবিলম্বে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর আবক্ষ মূর্তি যেন সবার দূর থেকে নজরে আসে তার ব্যবস্থা করা হয়।

    স্থানীয় বাসিন্দা নবেন্দু সাহা বলেন, আমরা আমাদের প্রাণের সুভাষচন্দ্রের মূর্তিটিকে এভাবে আড়ালে বন্দি করে রাখব কেন? এমনভাবে পোড়ামাতলার দোকানপাটে মূর্তিটি ঘিরে আছে, তাতে নবদ্বীপ দর্শন করতে আসা বাইরের কোনও পর্যটক নেতাজির এই মূর্তিটি একপ্রকার দেখতেই পান না। শহরের প্রাণকেন্দ্র পোড়ামাতলায় এই স্থানে একটা সময় নবদ্বীপের সমস্ত রাজনৈতিক সভা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠনের মিটিং, মিছিলে বহু মানুষের ভিড় হতো। এখানেই রয়েছে নবদ্বীপের গ্রাম্যদেবী পোড়ামার পীঠস্থান। কিন্তু, এমন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেবল জাতীয় উৎসবগুলির দিনগুলিতেই নেতাজিকে যেন মাথায় করে রাখা হয়, তারপর যে কে সেই!

    নবদ্বীপের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক কর্মী অপূর্ব পোদ্দার বলেন, আমাদের এখানে যে নেতাজির মূর্তিটি আছে, তা খুব ছোট বয়স থেকেই দেখছি। আমরা এটাও শুনেছি নেতাজি পোড়ামাতলায় এসে জনসভা করেছিলেন। এও শুনেছি সপ্তম এডওয়ার্ড লাইব্রেরি বা সাধারণ গ্রন্থাগারেও তিনি এসেছিলেন। যেখানে তাঁর মূর্তিটা রয়েছে, তা নিয়ে এখানকার দোকানদাররা নেতাজি সম্পর্কে কতটা মূল্যায়ন করতে পারেন জানি না। তবে তাঁরা যেভাবে দড়ি, ত্রিপল, প্লাস্টিক দিয়ে তাঁকে আড়াল করে ঢেকে দিয়েছেন, সেটা একদম উচিত নয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় নবদ্বীপের মতো একটা জায়গায় কতিপয় ব্যবসায়ীর জন্য নেতাজির মূর্তিটা ঢাকা পড়ে যাচ্ছে, এটা ঠিক নয়। পোড়ামাতলার বাসিন্দা বাবন চৌধুরী বলেন, বাবার মুখে ছোট বেলায় শুনেছি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু নবদ্বীপ পোড়ামাতলায় এসে বক্তৃতা দিয়ে ছিলেন। তাই সেই স্থানেই এই স্ট্যাচু বসানো হয়েছিল। নবদ্বীপ পোড়ামা প্রাঙ্গণ পোড়ামা ভবতারিণী ভবতারণ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বলাই গোস্বামী বলেন, আমরা  সারা বছর এখানে ব্যবসা করে পেটের দু’টো ভাত জোগাড় করি। বিশেষ দিনে ওই স্থানটার পলিথিন সব গুটিয়ে নিই। নেতাজির মূর্তি রং করে ফুল মালা দিয়ে সাজিয়ে সমস্ত ব্যবস্থা করে রাখি। যাতে সব দলমত নির্বিশেষে মাল্যদান করতে পারে।  • নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)