• কৃষকদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন নেতাজি
    বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৪
  • মঙ্গল ঘোষ, পুরাতন মালদহ: ১৯৩৯ সালের ৩১ জানুয়ারি। মালদহ জেলার নঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরাতন ভিটা খেলার মাঠে এক বিরাট কৃষক সম্মেলন হয়। সেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে যোগ দিতে এসেছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। ওই সময় অংশ নেওয়া অগণিত কৃষকদের তিনি অনুপ্রেরণা এবং সাহস জুগিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, জনসভা শেষে স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে নেতাজি সাক্ষাৎ করেছিলেন। কিছুটা সময় স্কুলে কাটিয়েছিলেন। তাঁর আগমনে স্থানীয় নঘরিয়া এলাকা সহ জেলাতে জাতীয়তাবাদী ও কৃষক আন্দোলন আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

    সেই ঘটনার পর ৮৫ বছর কেটে গিয়েছে। তবুও এখনও সেই স্মৃতিগুলি স্থানীয় বাসিন্দাদের মন থেকে হারিয়ে যায়নি। বিশেষ করে আজ,  বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা দিবসের দিনে নেতাজিকেই গ্রামবাসীদের সব থেকে বেশি মনে পড়ছে। নেতাজির পদার্পণের কারণে আজও ওই স্কুল ও গ্রামবাসীদের গর্বে বুক ফুলে উঠে। তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখতে এবং মানুষকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানাতে ন’বছর আগে স্কুলে নেতাজির আবক্ষ মূর্তি ও ফলক বসানো হয়েছে। তাতে ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে। এবারও স্কুলের তরফে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আবক্ষ মূর্তিতে শ্রদ্ধা সহকারে মাল্যদান করা হবে। সেখানে স্থানীয় বহু পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করবে। এনিয়ে ব্যাপক তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, মালদহ জেলার সদর ইংলিশবাজার শহর থেকে ১০ কিমি দূরে রয়েছে অমৃতি গ্রাম। সেখান থেকে আরও ৪ কিমি ভিতরে ফুলবাড়িয়াতে  নঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত। স্কুলটি ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আগে স্কুলটি ফুলবাড়িয়াতে ছিল না। ছিল আরও ৫ কিলোমিটার দূরে কালিন্দ্রী নদী সংলগ্ন পুরাতন ভিটাতে। সেখানে নেতাজি এসেছিলেন। ১৯৬২ সালে কালিন্দ্রী নদীতে ভাঙন শুরু হয়। ১৯৬৪ সালে স্কুল স্থান পরিবর্তন হয়। তারপর থেকে ফুলবাড়িয়াতে স্কুল রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, জেলায় এসে তিনি মালদহে গম্ভীরা গান শুনে আপ্লুত হয়েছিলেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে এর বেশ প্রশংসা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘গম্ভীরা গানের এত ধার রয়েছে, যে ব্রিটিশকে নাড়িয়ে দিতে পারে।’ নঘরিয়া হাইস্কুলের ভূগোলের শিক্ষক বাবলু মণ্ডল বলেন, ১৯৩৯ সালে স্বাধীনতা আন্দোলনের উত্তাল সময়। ওই সময় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কৃষক সম্মেলনে যোগ দিতে আমাদের স্কুলের পুরনো ভিটা মাঠে এসেছিলেন। নেতাজির পদধুলি ধন্য স্কুল ও গ্রামের অংশ হতে পেরে আমরা সত্যিই গর্বিত। স্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে তাঁর আবক্ষ মূর্তিতে বিশেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)