• তদন্তে ফাঁক! প্রশ্ন তুলল সিবিআই
    বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিসের তদন্ত নিয়েই প্রশ্ন তুলল সিবিআই। ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে তারা। আর সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দাবি করছে, একাধিক ফাঁক রয়েছে প্রক্রিয়ায়। আধিকারিকরা প্রশ্ন তুলেছেন, হাসপাতালের প্রিন্সিপাল বিষয়টি জানার পর কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন? তদন্তকারী অফিসারদের ভূমিকাও রয়েছে আতশ কাচের তলায়।

    বুধবারই অতিরিক্ত ডিরেক্টরের নেতৃত্বে ২৫ জনের একটি দল দিল্লি থেকে কলকাতায় আসে। সকালে সঞ্জয়কে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে কলকাতা পুলিস। সিবিআই তাকে জোকা ইএসআইতে নিয়ে গেলেও বিক্ষোভের জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যায়নি। শেষমেশ শিয়ালদহে বি আর সিং হাসপাতালে  তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরীক্ষার পর আনুষ্ঠানিকভাবে কলকাতা পুলিসের হাত থেকে অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই। আজ বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি তাদের তরফে আদালতে জমা পড়ার কথা। যুগ্ম অধিকর্তার নেতৃত্বে অন্য টিম ফরেন্সিক ও মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পৌঁছে যায় আর জি করে। সেমিনার রুম ও আশপাশের ফুটেজ সংগ্রহ করার পাশাপাশি অন্য তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করে তারা। এই পর্বেই কিছু প্রশ্ন সিবিআইয়ের অন্দরে দানা বাঁধছে। অফিসাররা জেনেছেন, খবর পেয়ে টালা থানার যে অফিসার ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন, তিনি তরুণীকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় নিথর পড়ে থাকতে দেখেন। তারপরেও তিনি স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কেন ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ রুজু করলেন না? এই অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধারের পরও শুধু অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা কীভাবে দায়ের হয়? তার উপর, যেখানে দেহ পড়ে থাকবে, ওই জায়গা ঘিরে রাখাটাই নিয়ম। এক্ষেত্রে তা করা তো হয়ইনি, উল্টে ঘটনাস্থলে যাকে খুশি আসতে দেওয়া হয়েছে। শুরু হয়েছে সংস্কার-নির্মাণও। এই ইস্যুতে এদিনই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সদ্য প্রাক্তন প্রধান অরুণাভ দত্তচৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘আমার নির্দেশে নির্মাণ-সংস্কারের কাজ হয়নি। যা হয়েছে, প্রিন্সিপালের নির্দেশে।’ তাঁর আরও দাবি, এক সহকারী সুপারই মৃতার পরিবারকে পরিবারকে জানান, তরুণী আত্মহত্যা করেছেন। এতে চাপানউতোর আরও বেড়েছে। এরইমধ্যে সেমিনার রুমের পাশের অংশে ভাঙচুর নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন কৌস্তুভ বাগচী। আদালত এখনও মামলা গ্রহণ করেনি।

    সিবিআই আগেই প্রশ্ন তুলেছিল, প্রিন্সিপাল কেন অভিযোগ করেননি বা তাঁকে দিয়ে কেন থানা অভিযোগ করায়নি? অরুণাভবাবুর বয়ান পাওয়া মাত্র ফাঁস আরও শক্ত করতে চাইছে এজেন্সি। তারা প্রশ্ন তুলছে, ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে সুরতহাল করানোর সময়ও কেন অধ্যক্ষকে সাক্ষী করা হল না? তিনি তো দেহ দেখতে গিয়েছিলেন। তরুণীর দেহ পড়ে থাকার খবর যে ইন্টার্ন দিয়েছিলেন, তাঁর বয়ানই বা কেন প্রথম দিন রেকর্ড করা হল না? যে সহকারী সুপার বাড়িতে ফোন করে আত্মহত্যার কথা বলেছিলেন, তাঁকে কি প্রথম দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল? তাই এই মামলার সম্পর্কিত সকলকে ডাকার জন্য তালিকা তৈরি হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)