• সদ্য মা হওয়া স্ত্রীর পেটে লাথি মারেন আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ!
    বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: আর জি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে। আর এই ঘটনায় এখন জনতার ‘স্ক্যানারে’ প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডাঃ সন্দীপ ঘোষ। ধীরে ধীরে তাঁর কীর্তি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। সব ছাপিয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে, বারাসতে স্ত্রীর পেটে  সন্দীপের লাথি মারার ঘটনাটি। এই কাহিনি প্রকাশ্যে এনে প্রতিবেশীরা এখন তাঁকে ধিক্কার জানাচ্ছেন। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮-২০০৯ সালে বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন সন্দীপ। তখন তিনি বারাসতে রথতলা সংলগ্ন হৃদয়পুরের মল্লিকবাগানে একটি বাড়ি কেনেন। বাড়ির নীচেই ছিল চেম্বার। বাইরে নেমপ্লেটে লেখা ছিল ডাঃ এস ঘোষ। এই নামেই তখন তিনি প্রতিবেশীদের কাছে পরিচিত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি এখানেই থাকতেন। বছর ১০ আগে অবশ্য এই বাড়ি বিক্রি করে তিনি চলে যান। বারাসতের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও তাঁর বিভিন্ন কীর্তিকলাপ প্রতিবেশীদের মুখে মুখে ফিরছে। 

    বারাসতে থাকাকালীন ডাঃ সন্দীপ ঘোষ কেমন মানুষ ছিলেন? উত্তর খুঁজতে গিয়েই প্রতিবেশীদের মুখে শোনা গেল ওই অর্থোপেডিক ডাক্তারের কাহিনি! প্রতিবেশীদের সঙ্গে সন্দীপের সুসম্পর্ক ছিল না। চেম্বারে আসা রোগীদের সঙ্গেও ভালো ব্যবহার করতেন না বলেই দাবি এক সময়কার পড়শিদের। ডাক্তার হিসাবে তাঁকে দেখানোর জন্য নির্দিষ্ট ভিজিট দিতে হতো। এছাড়া রিপোর্ট দেখানোর সময়েও ফিজ দিতে হতো তাঁকে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশা না করা, রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা— এসব ছাপিয়ে এখন লোকমুখে ফিরছে স্ত্রীর পেটে লাথি মারার কাহিনি। 

    স্থানীয়দের কথায়, সন্দীপের স্ত্রী তখন সদ্য মা হয়েছেন। সদ্যোজাতের বয়স মাত্র ১৪ দিন। অস্ত্রোপচারের পর বাড়িতে এসেছেন তাঁর স্ত্রী। বাড়িতে নতুন অতিথি, ডাক্তার, স্ত্রী ছাড়াও মল্লিকবাগানের বাড়িতে সন্দীপের মাও থাকতেন। মা ও ছেলে মিলে স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন বলেই এখন মুখ খুলছেন প্রতিবেশীরা। সাংসারিক কোনও বিষয় নিয়ে আচমকাই সদ্য মা হওয়া স্ত্রীর পেটে লাথি মেরেছিলেন বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের। এরপরে স্ত্রীকে ঘরে আটকে রেখেছিলেন তিনি। বিষয়টি তখন জানাজানি হতেই প্রতিবেশী মিহির চক্রবর্তী সহ স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যরা তাঁর স্ত্রীকে উদ্ধার করেন। এনিয়ে মিহির বলেন, প্রথমে আমাদের ঘরেই ঢুকতে দিচ্ছিলেন না। ওদিকে তাঁর স্ত্রী কাঁদছেন একটু সাহায্যের জন্য। শেষে আমরা ডাক্তারের স্ত্রীকে ঘর থেকে উদ্ধার করি। সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটা অটো নিয়ে তিনি বেরিয়ে যান। ওঁর স্ত্রীর সেলাইও কেটে যায়। সেদিনের বীভৎসতা ভোলার নয়। আর এক স্থানীয় বাসিন্দা দুলালচন্দ্র দাস বলেন, ওই চিকিৎসক সবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ডাঃ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়। কিন্তু কোনওভাবেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। 
  • Link to this news (বর্তমান)