• স্বাধীনতা দিবসে ছুটি বেসরকারির আউটডোরে, দু’দিন ধরে টানা ভোগান্তিতে নাজেহাল অসুস্থরা
    বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বাইরে হাতে কাগজ নিয়ে বসে এক ব্যক্তি। একের পর এক ফোন করছেন আর বলছেন, ‘আমার স্ত্রীয়ের কেমো নেওয়ার পর থেকে সমস্যা হচ্ছে। আজ বা বৃহস্পতিবার কোনও ডাক্তার দেখানো যাবে?’ ওপার থেকে উত্তর আসছে, শুক্রবারের আগে হবে না। কারণ, ১৫ আগস্ট এমনিতেই ছুটি। অগত্যা শুক্রবারই স্ত্রীকে নিয়ে দেখাতে যাবেন তিনি। আর জি কর কাণ্ডের পর আন্দোলনের ঝড় বুধবার সরকারি হাসপাতাল থেকে বেসরকারি হাসপাতালেও ছড়িয়ে পড়েছিল। বন্ধ ছিল সমস্ত হাসপাতালের ওপিডি। ফলে গত কয়েক দিনের মতো এদিনও শহরের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভোগান্তির ছবি দেখা গিয়েছে। 

    বাইপাসের হাসপাতালগুলির মধ্যে কয়েকটি জায়গায় বুধবার ওপিডি খোলা ছিল। কিন্তু যাঁদের আগে থেকে সময় নেওয়া ছিল, শুধুমাত্র তাঁরাই চিকিৎসকদের দেখাতে পেরেছেন। কেউ আচমকা এসে দেখাতে চাইলে সে ব্যবস্থা ছিল না। আবার কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের ওপিডি একেবারেই ছিল বন্ধ। গেটে তালা আর বাইরে নোটিশ দেখা গিয়েছে। আগের থেকে সময় নেওয়া রোগীদের সকালেই ফোন করে আসতে ‘না’ বলা হয়েছিল। অনেকেই ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে চলে এসেছিলেন। গড়িয়া থেকে মাকে নিয়ে এসেছিলেন সম্বিত ঘোষ (নাম পরিবর্তিত)। দু’টি হাসপাতাল ঘুরে তিনি স্থানীয় লোকজনকে আরও একটি হাসপাতালের ঠিকানা জিজ্ঞেস করছিলেন। সকলেই তাঁকে জানান, কোথাও ডাক্তার পাবেন না। তবুও সম্বিতের বক্তব্য, ‘এসেছি যখন একটু ঘুরে দেখি। যদি পাওয়া যায়।’ কারণ একটাই, বেসরকারি হাসপাতালে স্বাধীনতা দিবসের দিন ওপিডি বন্ধ থাকে। কাজেই বুধবার ডাক্তার দেখাতে না পারলে শুক্রবারের আগে কোনও সুযোগ নেই। 

    বেসরকারির পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালেও রোগীদের ভোগান্তি ছিল অব্যাহত। পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সির সামনে পড়ুয়ারা অবস্থান বিক্ষোভ করেন। বিকেলে পড়ুয়ারা পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট পর্যন্ত মোমবাতি মিছিল করে। ফলে ওপিডিও ছিল বন্ধ। ট্যাংরা থেকে এসেছিলেন সোমনাথ হালদার। তিনি বললেন, ‘আউটডোর বন্ধ। আমার পায়ের হাড়ে ক্র্যাক ধরেছে। অনেক অনুরোধের পর ডাক্তার আমাকে দেখেছেন। আবার দু’সপ্তাহ পর আসতে বলেছেন। শনিবারও এসেছিলাম। আমাদের মতো মানুষের খুব সমস্যা। সুস্থ না হলে কাজে যোগ গিতে পারছি না।’ একই চিত্র কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও। কানে সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন মহম্মদ সাহাবুদ্দিন। তিনি জানান, কোনও চিকিত্সক নেই। ভিতর থেকে একজন বললেন, আজ বাড়ি যান। বি আর সিং হাসপাতাল থেকে এদিন এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার হয়ে আসেন এক মহিলা। কিন্তু জরুরি বিভাগের সামনে প্রায় এক ঘণ্টা স্ট্রেচারে শুয়ে থাকতে হয়। পরে অবশ্য তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)