• ১৭০০ পাখির মৃত্যুতে এবার  দিতে হবে ক্ষতিপূরণ: হাইকোর্ট
    বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ওএনজিসির প্রকল্পের দেওয়ালে অবরুদ্ধ অক্সিজেন! শ্বাস নিতে না পেরে অন্তত ১৭০০ পাখির মৃত্যু! ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়েও মেলেনি কানাকড়ি। বাধ্য হয়ে তাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বনগাঁর বাসিন্দা আলিম মণ্ডল। এই প্রেক্ষিতে ওএনজিসি-কে রীতিমতো সতর্ক করে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ওই প্রকল্পের জন্য ভবিষ্যতে জনমানসে যাতে কোনওরকম প্রভাব না পড়ে, তা ওএনজিসি কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে। মামলাকারীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি শম্পা সরকার। 

    বনগাঁর গোপালনগর থানা এলাকার আক্কাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। ২০২২ সালে ওই এলাকায় মাটির তলায় তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস খোঁজার জন্য একটি প্রকল্প শুরু করে ওএনজিসি। মামলার বয়ান সূত্রে জানা যাচ্ছে, সেই প্রকল্পের জন্য মামলাকারী আলিম মণ্ডলের কাছ থেকে সাড়ে চার শতক জমি লিজ নেয় ওএনজিসি কর্তৃপক্ষ। ওই জমির ২ থেকে ৩ ফুট দূরত্বে প্রায় ২ হাজার বর্গফুট এলাকাজুড়ে রয়েছে আলিম মণ্ডলের পোল্ট্রি ফার্ম। সেখানে তিনি মুরগি ছাড়াও অন্যান্য পাখি ফার্মিং করেন। অভিযোগ, ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট ওই জমির পাশের এলাকায় খননকার্য শুরু করে ওএনজিসি কর্তৃপক্ষ। খননের পর উঠে আসা যাবতীয় মাটি ওই পোল্ট্রি ফার্মের পাশেই মজুত করে তারা। প্রায় সাত ফুট উঁচু করে মাটি জমা করা হয়। অভিযোগ, প্রায় ১০ দিন ফার্মের পাশে এভাবে মাটি রেখে দেওয়া হয়। ফলে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে ফার্মের মুরগি ও অন্যান্য ধরনের পাখি মিলিয়ে মোট ১৭০০ পাখির মৃত্যু হয়। পশু চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, অক্সিজেনের অভাবেই পাখিগুলির মৃত্যু হয়েছে। এরপরই ক্ষতিপূরণের দাবিতে ওএনজিসি কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন মামলাকারী। কিন্তু তাতেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় পরবর্তীতে তিনি হাইকোর্টে মামলা করেন। 

    বিচারপতি সরকারের এজলাসে মামলার শুনানিতে মামলাকারীর তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। ওনজিসি কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, মামলাকারীই তাদের ওই জমি লিজে দিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের প্রসঙ্গ নেই। কিন্তু উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে নির্দেশে বিচারপতি সরকার জানিয়েছেন, ওই প্রকল্পের জন্য ভবিষ্যতে জনমানসে যাতে কোনও প্রভাব না পড়ে, তা ওএনজিসি কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে। তিনি নির্দেশে আরও জানিয়েছেন  ক্ষতিপূরণের জন্য মামলাকারী ওএনজিসি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবেন। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে ওএনজিসিকে দু’সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)