• তৃণমূল নেতার ‘মাতব্বরি’তে বেহাল রাস্তা, ক্ষোভে ফুঁসছে দেগঙ্গার গ্রাম
    বর্তমান | ১৫ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: তিন ফসলি জমির মাটি কেটে রাতারাতি পাচার করা হয়েছে। কেউ মুখ খুললেই তাঁর উপর নেমে এসেছে অকথ্য অত্যাচার। চলেছে মারধর। তাই একপ্রকার নীরবেই তৃণমূল নেতা ও তাঁর শাগরেদদের ‘মাতব্বরি’ সহ্য করে যাচ্ছেন এলাকার মানুষ। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন দেগঙ্গা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাসিয়ার মানুষ।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার হাসিয়া এলাকায় রয়েছে কয়েক বিঘা চাষযোগ্য জমি। এই জমিতে বছরে তিনবার চাষ হয়। কিন্তু হঠাৎ করে তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতা জমি থেকে কৃষকদের হটিয়ে মাটি কেটে তা পাচার করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। কখনও ইটভাটায়, কখনও জলাশয় ভরাটের জন্য ওই মাটি ব্যবহার করেন এই নেতা। বড় বড় লরিতে করে মাটি নিয়ে যাওয়ার কারণে গ্রামের রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। রাস্তা জুড়ে কাদার প্রলেপ। সম্প্রতি, এক কৃষক এই কাজের প্রতিবাদ করায় তাঁকে বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়েছে। কীর্তিমান ওই তৃণমূল নেতা দলের দেগঙ্গা ব্লকের সভাপতির ছায়াসঙ্গী বলে পরিচিত। আতঙ্কে এলাকার মানুষ এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে ভয় পান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, তৃণমূলের এই নেতা ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে এলাকায় যা খুশি, তাই করছেন। কিছু বলতে গেলেই মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। যেভাবে রাতের অন্ধকারে মাটি কেটে পাচার হয়েছে, তার জন্যই হাসিয়ার রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে মানুষকে। এই নেতার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ জেলা প্রশাসনের দপ্তরের অভিযোগ জানানো হলেও কোনও কাজ হয়নি। উল্টে তাঁর ‘মাতব্বরি’ বেড়ে গিয়েছে।

    এ বিষয়ে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বলেন, রাস্তাটি যাতে সংস্কার করা হয়, তার জন্য আমি বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছি। আমি মাটি পাচার করেছি, এই তথ্য আপনাদের কে দিয়েছে? তাঁর ফোন নম্বর দিন। এ নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ওই নেতার বিরুদ্ধে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও পুলিসকে বলা হয়েছে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে। কেউ যদি নিজের স্বার্থে দলকে ভাঙিয়ে অসাধু কাজ করে, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের দল দুর্নীতিকে বরদাস্ত করে না। 
  • Link to this news (বর্তমান)