আরজি কর নিয়ে কিছু নেতার বিবৃতিতে অসন্তুষ্ট তৃণমূলনেত্রী
এই সময় | ১৫ আগস্ট ২০২৪
এই সময়: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী-চিকিৎসকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সন্ধেয় অবস্থানে বসেছিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে প্রতিবাদে সামিল হওয়ার কথা মঙ্গলবারই ঘোষণা করেছিলেন তিনি। রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন আবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা রসাতলে গিয়েছে বলে এ দিনই সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন।তৃণমূলের কয়েকজন নেতার পরিবারের সদস্যরাও বুধবার রাতে মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। যদিও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা নিয়ে দলের নেতাদের আলটপকা মন্তব্য না করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন মমতা। সেই পরামর্শ না-শুনে যে ভাবে শান্তনু মুখ খুলেছেন, তা দেখে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রবল অসন্তুষ্ট বলে তৃণমূল নেতাদের একাংশের বক্তব্য।
এ দিন সন্ধেয় বেহালায় তৃণমূলের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যেও সেই অসন্তোষের সুর স্পষ্ট বলে মনে করছেন জোড়াফুল নেতৃত্বের একটা বড় অংশ। সেখানে কারও নাম না-করে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের যাঁদের একটি কথাও বলতে বারণ করেছিলাম, তাঁদের মধ্যে দু’-একজন বলছেন, আমি ছেড়ে দিলাম মুখপাত্রের পোস্ট। তাঁদের আমরা আগেই সরিয়ে দিয়েছি। মনে রাখবেন, তাঁরাও কিন্তু চক্রান্তের মধ্যে ছিলেন। যখন আমরা জানতে পেরেছি, আমি তৃণমূল কংগ্রেস করে বলে রেয়াত করিনি।’
কেন সুখেন্দু অবস্থানে বসলেন?
প্রবীণ এই সাংসদের ব্যাখ্যা, ‘সারা বাংলা যে কথা বলছে, আমরাও সেই কথার প্রতিধ্বনি করছি। আমরা নীরবতার সঙ্গে সত্যাগ্রহ করছি। এই ঘটনায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে ধরতে হবে। যে দেশে নারীর সম্মান ভুলুন্ঠিত হয়েছে, সেই দেশ গোল্লায় গিয়েছে।’
হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নাম না-করে তিনি বলেন, ‘আরজি করের যিনি প্রধান ছিলেন, তিনি তো অরণ্যদেবের মতো বাউন্সার নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন!’ সুখেন্দুর এই প্রতিবাদকে সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মতো বিরোধী নেতৃত্ব। সুখেন্দুর থেকেও চড়া সুরে সরব হয়েছেন শান্তনু।
তিনি এ দিন সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আরজি করের মেডিক্যাল এডুকেশন গত কয়েক বছরে রসাতলে গিয়েছে। কয়েকজনকে খুশি করতে পারলে পরীক্ষার প্রশ্ন জানা যায়। পরীক্ষা হলে টোকাটুকি করা যায়। মুখ্যমন্ত্রী মনে হয় সব জানেন না। সঠিক খবর তাঁর কাছে পৌঁছচ্ছে না। নেত্রী হয়তো ভুল বুঝতে পারেন আমাকে।’ তবে তৃণমূলনেত্রীর বার্তার পরে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে তৃণমূলের হয়ে আর সওয়াল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শান্তনু।