এই সময়: বুধবার ১১তম কন্যাশ্রী দিবসে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ২৪ জন ছাত্রীকে পুরস্কৃত করল রাজ্য সরকার। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমবিবিএস তৃতীয় বর্ষের দুই ছাত্রী মধুরিমা মিশ্র ও তিয়াসা চন্দ্রও। আলিপুরের ধনধান্য অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠান শেষে মধুরিমা বলেন, ‘আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার আমরা বিচার চাই। যা হয়েছে, সেটা মানা যায় না।’হাসপাতাল ও হস্টেলে নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে মধুরিমা বলেন, ‘এতদিন তো নিরাপত্তা ঠিক ছিল বলেই মনে হতো। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতের মর্মান্তিক ঘটনার পর মনে হচ্ছে, নিরাপত্তা আরও বাড়ানো দরকার। আমাদের দাবিগুলি রাজ্য সরকার ও হাসপাতাল প্রশাসনকে পূরণ করতে হবে। না হলে অবস্থান-ধর্না চলবে।’
তাঁর বাবা কল্লোল মিশ্রর বক্তব্য, ‘আরজি করের ঘটনায় দু’দিন রাতে ঘুম হয়নি। চিন্তা তো হবেই। এখনও আমরা সন্ত্রস্ত। তবে মেয়েকে হস্টেলেই রাখতে হবে। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে তো আর যাতায়াত করা যায় না!’
বাল্যবিবাহ আটকানো ও প্রতিরোধের জন্যে এ দিন কন্যাশ্রী পুরস্কার পেয়েছেন আরও ১২ জন ছাত্রী। পুরস্কার হিসেবে তাঁরা পেলেন ব্যাগ, ঘড়ি, ছাতা, মানপত্র এবং পাঁচ হাজার টাকা। অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘কন্যাশ্রী একটা নিঃশব্দ বিপ্লব। যা গোটা ভারতবর্ষকে পথ দেখিয়েছে।’
নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজার কথায়, ‘বাংলার শিক্ষা পোর্টালের সঙ্গে কন্যাশ্রী প্রকল্পকে যুক্ত করা হয়েছে। ফলে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের তথ্য সহজেই আমাদের দপ্তরে চলে আসবে। বাল্যবিবাহ রুখতে ২০২২ সালে রাজ্যজুড়ে জেলা ধরে ধরে সার্বিক পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতেই ২০২৪-এর জানুয়ারিতে একটি বিশেষ পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। এই পোর্টালের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরাও যুক্ত।’
দপ্তরের কর্তারা বলছেন, এই পোর্টালের সাহায্যেই মেয়েদের ট্র্যাক করে বাল্যবিবাহ রোখা যায়। এই কাজে যুক্ত থাকা সব ব্যক্তি বা এজেন্সিকে বাল্যবিবাহ নিয়ে সচেতনও করা হয়েছে। বছরে পাঁচ হাজার বাল্যবিবাহ রোধ করা হচ্ছে। ভারতে ইউনিসেফ-এর প্রতিনিধি আর্জেন ডি ওয়াগড বলেন, ‘কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প শুধু ভারতে নয়, সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন।’