• রবি ঠাকুরের কবিতার সেই অঞ্জনা নদীকে বাঁচাতে পদযাত্রা করবেন নদীকর্মীরা 
    বর্তমান | ১৬ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রবি ঠাকুরের সেই ‘আমাদের এই নদীর নামটি অঞ্জনা’র অঞ্জনা নদীটি ভালো নেই। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই খারাপ থাকার শুরু অনেকদিন আগে থেকে। কৃষ্ণনগরের রাজা রুদ্র রায়ের রাজত্বকাল ছিল ১৬৮৩ থেকে ১৬৯৪। সেই সময় থেকেই অঞ্জনার গতিপথ রুদ্ধ হয়েছিল। কৃষ্ণনগর শহরের বুকে সেই অঞ্জনা নদী আজ কার্যত খালে পরিণত হয়েছে, অভিযোগ এমনটাই। তাই আগামী ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর রানাঘাট ব্যসপুর থেকে কৃষ্ণনগর ৩২ কিলোমিটার নদীপথ নদী সংস্কারের দাবিতে হাঁটবেন নদীকর্মীরা। 

    কৃষ্ণনগর শহরের পাশে জলঙ্গী নদী থেকে অঞ্জনার উত্স। শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যেতে যেতে অঞ্জনা রানাঘাটের ব্যসপুরে চুর্ণীতে গিয়ে মিশেছে। অঞ্জনা নদী বাঁচাও কমিটির আহ্বায়ক দীপক রায় বলছিলেন, ‘কৃষ্ণনগর শহরে জলঙ্গি থেকে অঞ্জনায় জল আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নগেন্দ্রনগর থেকে বেজিখালি পর্যন্ত নদী সরু হয়ে গিয়েছে। আবার শক্তিনগর থেকে দোগাছি পর্যন্ত এখনও নৌকা চলে।’ এই অঞ্জনা নদী নিয়ে আবেগ ছিল মাইকেল মধুসূদন দত্তরও। তিনি বলেছেন, ‘হে অঞ্জনে, তোমাকে দেখিয়া অতিশয় প্রীয় হইলাম। তোমাকে কখনওই ভুলব না এবং তোমার বর্ণনা করিতেও ত্রুটি করিব না।’ ব্রিটিশরাও অঞ্জনা নদীতীরে নীল চাষের কারবার খুলেছিল। দীপকবাবুর প্রশ্ন, ‘নদীর বুকে গড়ে ওঠা বাড়ি, কমপ্লেক্স, বাণিজ্যকেন্দ্র কি আইনি? কৃষ্ননগর শহরে বেজিখালি সেতুর পূর্বদিকে নদী যেখানে ১০০ থেকে ১৫০ ফুট চওড়া, আবার পশ্চিমদিকে কীভাবে তা ১০ থেকে ১৫ ফুট চওড়া? এটা নদীকে খালে রূপান্তরিত করার অপচেষ্টা।’

    পরিবেশকর্মীরা বলছেন, পরিবেশ রক্ষার জন্য নদী রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। এই নদীকে কেন্দ্র করেই মত্স্যজীবী, কৃষিজীবীরা বেঁচে থাকেন। সেই কারণেই অঞ্জনা নদীকে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন। দীপকবাবু বলছিলেন, ‘এই নদী সংস্কার করা ১০০ শতাংশ সম্ভব। যদি জাতীয় সড়ক ২৫ মিটার থেকে ৪০ মিটার চওড়া হতে পারে, তবে নদীর সংস্কার করা রাষ্ট্রের কাছে কোনও ব্যাপারই নয়।’
  • Link to this news (বর্তমান)