• তৃণমূলের শিক্ষাসেলকে নিয়ে বিরক্ত খোদ চেয়ারম্যানই, ব্রাত্যর ধমকে শোরগোল সংগঠনে
    বর্তমান | ১৬ আগস্ট ২০২৪
  • অর্পন সেনগুপ্ত, কলকাতা: দীর্ঘদিন নিষ্ক্রীয় থাকার পরে তৃণমূলের শিক্ষা সেল পুনর্গঠন করা হয়েছে। শিক্ষক সংগঠনগুলিতেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। একবার নয়, দু’বার পরিবর্তনের পরে বর্তমানের নেতৃত্ব ঠিক হয়েছে। সেলের চেয়ারম্যান হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তবে, সেলের অন্তর্গত সংগঠনগুলির কাজকর্মে চেয়ারম্যানই যে সন্তুষ্ট নন, তা প্রমাণিত হল মুর্শিদাবাদের একটি সম্মেলনে। দল যে শিক্ষাসেলের উপরে নির্ভর করে নেই, তা অকপটে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্যের পরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে শাসকদলের শিক্ষক-অধ্যাপক সংগঠনগুলিতে।

    ব্রাত্য বসু সরাসরিই বলেছেন, নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শিক্ষাসেলের উপরে তৃণমূল নির্ভরশীল নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষাসেলের সহায়তা ছাড়াই তিনবার ক্ষমতায় এসেছেন। তাই শিক্ষাসেল করতে শিক্ষকদের নিজেদের তাগিদেই এগিয়ে আসতে হবে। জনপ্রতিনিধিদের পাশে সবসময় থাকতে হবে। ক্ষমতা জাহির বা নিজেদের মধ্যে আকচাআকচি করতে হলে শিক্ষাসেলে আসার প্রয়োজন নেই। তিনি ফের মনে করিয়ে দেন, বামফ্রন্ট যেভাবে নিজেদের শিক্ষক সংগঠনগুলির উপরে নির্ভরশীল ছিল, তৃণমূলের সে প্রয়োজন নেই। বরং শিক্ষাক্ষেত্রে, বিশেষ করে শিক্ষকদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যা যা অবদান রেখেছেন, সেটিকে মাথায় রেখেই তাঁদের স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়েই সংগঠনে এগিয়ে আসা উচিত।

    ওয়াকিবহাল মহল শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যকে রাজনৈতিকভাবে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে। তাদের বক্তব্য, শিক্ষা সেলের বিভিন্ন নেতৃত্ব, বিশেষ করে জেলাস্তরে যেভাবে রেষারেষি রয়েছে, তাতেই বিরক্ত দল। প্রসঙ্গত, শিক্ষাসেলের অধীনে অধ্যাপক সংগঠন, মাধ্যমিক এবং প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন এবং শিক্ষাকর্মী সংগঠন রয়েছে। সেলের ভরা সভায় চেয়ারম্যানের এই সমালোচনা আবার অন্যান্য নেতৃত্ব ভালোভাবে নেয়নি। শিক্ষক সংগঠনের এক নেতা বলেন, নবরূপে গঠিত সেলের কর্মকাণ্ড অনেক বেড়েছে। দলীয় কর্মসূচিতে তারা এখন অনেক বেশি সক্রিয়। নির্বাচনী প্রচারেও বিভিন্ন সংগঠন হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছে। এই অবস্থায় খোদ চেয়ারম্যানই সেলের গুরুত্ব কমিয়ে দিলে সদস্যদের মনোবল ভেঙে যাবে।

    তবে, শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্যকে সমর্থন করছে দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের মতে, শিক্ষাসেলে যে রকম আকচঅআকচি চলে, তা মূল দল তৃণমূলকেও হার মানায়। অনেকেই সংগঠনের পদের জোরে যথেচ্ছাচার চালান বলে অভিযোগ আসে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষক-সদস্যদের এমনভাবে চাপ দেওয়া হয়, যাতে সংগঠনের প্রতি তাঁদের বিরূপ ভাব তৈরি হয়। সেই কারণেই চেয়ারম্যান সংগঠনগুলিকে তাদের সীমা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)