• নারী সংক্রান্ত মামলার তদন্তভার যাচ্ছে ডিভিশনে, নেতাজিনগর থানা মহিলা দারোগা শূন্য
    বর্তমান | ১৬ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: খাস কলকাতার মধ্যে আস্ত একটা থানা। তবে সেখানে নেই কোনও সাব-ইনসপেক্ট্রেস বা মহিলা দারোগা। কলকাতা পুলিসের সব থানায় বাধ্যতামূলকভাবে অন্তত একজন মহিলা দারোগা থাকা আবশ্যক। তবে নেতাজিনগর থানা তার ব্যতিক্রম। সেখানে ওসি, অ্যাডিশনাল ওসি সহ মোট ১১ জন পুরুষ তদন্তকারী অফিসার রয়েছে। তবে ‘ব্রাত্য’ শুধুমাত্র মহিলা তদন্তকারী অফিসার। যার জেরে নেতাজিনগর থানা এলাকার সমস্ত মহিলা সংক্রান্ত তদন্তের মামলা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। সেগুলি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ডিভিশনের (সাউথ সাবার্বান) নির্দিষ্ট মহিলা থানায়। যার ফলে সমস্যা পড়ছেন অভিযোগকারিণীরা।

    টালিগঞ্জ থানা এলাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ থানা হল নেতাজিনগর। কলকাতা পুলিস এলাকার প্রায় সীমান্ত বরাবর এই থানা ব্যপ্তি। তাই এই এলাকায় বিভিন্ন ধরণের মানুষের বাস। তবে নেতাজিনগরে মূলত কলোনি এলাকার আধিক্য বেশি। কলকাতা পুলিসের অপরাধের ট্রেন্ড বলছে, কলোনি এলাকায় মহিলাদের মারধর, বধূ নির্যাতনের অভিযোগ সাধারণত থানাগুলিতে বেশি আসে। ব্যতিক্রম নয় নেতাজিনগরও। তাই এই থানায় মহিলা তদন্তকারী অফিসার থাকা অত্যন্ত জরুরী। পুলিসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত বছর পর্যন্ত এই থানায় একজন মহিলা দারোগা ছিলেন। কিন্তু, এবছরের শুরুর দিকে কলকাতা পুলিসের থানা ও গোয়েন্দা বিভাগে ব্যাপক রদবদল ঘটে। সেই সময়েই নেতাজিনগর থানার ওই সাব-ইনসপেক্ট্রেসকে বদলি করে দেওয়া হয় যাদবপুর থানায়। তবে তাঁর শূন্যস্থান পূরণে কোনও মহিলা তদন্তকারী অফিসার দেওয়া হয়নি নেতাজিনগরকে। তার জেরে তৈরি হয়েছে ‘শূন্যপদ’।

    নেতাজিনগর থানায় অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনসপেক্ট্রেস রয়েছেন। তবে তাঁদের পক্ষে কোনও কেসের তদন্ত করা সম্ভব নয়। সেকারণেই বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে থানায় আসা মহিলা সংক্রান্ত কেসের তদন্ত। নিয়ম অনুযায়ী, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, বধূ নির্যাতন সংক্রান্ত অভিযোগগুলির ক্ষেত্রে একজন মহিলা অফিসারই অভিযোগ নেবেন। একইসঙ্গে, সেই কেসের তদন্ত করবেন ওই সাব-ইনসপেক্ট্রেস। শেষ তিনমাসে ওই থানায় যত মহিলা সংক্রান্ত অভিযোগ এসেছে তার একটিও তদন্তভার থানা হাতে নেই। সব কেস লিখে তদন্তভার পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে সাউথ সাবার্বান ডিভিশনের নির্দিষ্ট  পাটুলি মহিলা থানায়। সেখানে তিনজন সাব ইনসপেক্ট্রেস রয়েছেন। তাঁরা নিজেদের কেসের পাশাপাশি, নেতাজিনগর থানার মামলাও সামলাচ্ছেন। ফলে পুলিসের তদন্তের গতি স্বাভাবিকভাবেই অনেকটা কমেছে। একইসঙ্গে, আম জনতাকেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নেতাজিনগরের বাসিন্দা হলেও কেসের তদন্ত চলাকালীন নানান প্রয়োজনে পাটুলি পর্যন্ত ছুটতে হচ্ছে অভিযোগকারিণীকে।
  • Link to this news (বর্তমান)