প্রদ্যুত দাস: সালটা ১৫০৯! জলপাইগুড়িতে শুরু হয়েছিল এই পুজো। আজও, এই ২০২৪ সালেও, সমস্ত নিয়মনীতি মেনে জাঁকজমকপূর্ণভাবেই চলেছে সেই পুজো। মনসা পুজো। আগামীকাল, শনিবার সেই পুজো! আর পাঁচ জায়গার তুলনায় খানিক অন্যরকম এখানকার পুজো। নিরামিষ নয়, বরং পাঁচ রকম মাছের পদ দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয় মাকে! কোথায়? এ হল জলপাইগুড়ির ঐতিহ্যবাহী বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মনসা পুজো। এর ইতিহাস প্রচুর, রয়েছে নানা বিশেষত্ব!
জলপাইগুড়ির ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ির এই মনসা পুজো এবার ৫১৫ বছরে পদার্পণ করল! এই পুজোর সঙ্গে যে শুধু ইতিহাস জড়িয়ে আছে, তা নয়, এর রয়েছে নানা বিশেষত্বও। আর পাঁচ জায়গার মনসাপুজোর সঙ্গে বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মনসা পুজোর পার্থক্য আছে বলে জানান রাজপরিবারের সদস্যরা।
আর পাঁচটি পুজো থেকে কেন আলাদা এই পুজো?
রাজবাড়ির সদস্যদের কথায়, রাজবাড়িতে মা অষ্টমূর্তিতে পূজিতা হন। রয়েছে অষ্টনাগের মূর্তি। বেহুলা, লখিন্দর, গোদা-গোদানির মূর্তিও আছে। বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়িতে যে মূর্তিতে পুজো করা হয়, সেরকমও উত্তরবঙ্গের কোথাও নেই বলেই দাবি তাঁদের। পুজোর রীতিনীতিও অন্য জায়গার থেকে আলাদা। পুজোর তিন দিন ভিন্ন ভিন্ন ভোগ তৈরি করা হয় এখানে। পুজো শুরুর দিনে ভোগ হিসেবে থাকে সাদা ভাত। দ্বিতীয় দিনে খিচুড়ি তৈরি করা হয়। শেষ দিনে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় মিষ্টি। সেইসঙ্গে ভোগে পাঁচ ধরনের মাছও (ইলিশ, বোয়াল, চিতল, শোল এবং পুঁটি) থাকে।
ঐতিহ্যবাহী সেই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ বিষহরির প্রাচীন গান। পুজোর তিনদিন সেই গান চলে। সঙ্গে মেলাও। ভক্তদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। অনেকের দাবি, বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির পুজোয় মূর্তির যে চালচিত্র ব্যবহার করা হয়, তাতে মনসামঙ্গলের কাহিনির স্পষ্ট ছাপ আছে। এই ঐতিহ্যবাহী পুজোর সাক্ষী থাকতে এখানে বরাবর উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ, অসম, বিহার থেকেও প্রচুর মানুষ আসেন।