দমদম পূর্ব সিঁথির বাসিন্দা সৌমিক দাস। সে নিজের মুখে স্বীকার করেছে যে, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বুধবার রাতে ভাঙচুর চালিয়েছিল সে। তবে কারও প্ররোচনাতে নাকি নয়! সকলে যখন ভিতরে ঢুকে পড়ে, সেও তখন আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের ভিতর প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়। এমকি যারা সেদিন রাতে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ভিতর ভাঙচুর চালিয়েছিল, তাদের অনেককেই সে চেনে বলে এমনটাও জানিয়েছে। আর এরপরই বিজেপির মণ্ডল সভাপতি দাবি করেছেন, ধৃত সৌমিক দাস একজন তৃণমূল কর্মী। স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে মিছিল-মিটিংয়ে তাকে দেখা যায়। ধৃত সৌমিক দাস দক্ষিণ দমদম পুরসভার কাউন্সিলরের রাজু সেনশর্মার 'ঘনিষ্ঠ' বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও কাউন্সিলর রাজু সেন শর্মা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, "আমার পাশের ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ছেলেটাকে আমি চিনি না। কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত ছিল না।"
ওদিকে সৌমিক দাসের পাশাপাশি আরজিকর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় লেকটাউন বরাটের বেদিয়া পাড়ার বাসিন্দা শেখ শাহজাহানের ছবিও সামনে এসেছে। ঘটনার দিন প্রকাশ্যে হাসপাতালে ভাঙচুর চালাচ্ছে শেখ শাহজাহান, সেই ছবি সামনে আসার পর তাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিস। ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪। বুধবার মধ্য়রাতে যখন রাজপথে গোটা বাংলা, তখনই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় আরজি হাসপাতাল। একদল দুষ্কৃতী হাসপাতালে ঢুকে ব্য়াপক ভাঙচুর চালায় জরুরি বিভাগে, পুলিসের গাড়িতে, এমনকি ব্যারাকেও! মুহূর্তে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে আরজিকর চত্বর। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ লাঠিচার্জ করতে হয় পুলিসকে।
ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের ভিতরও চলে ভাঙচুর। ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়েছে কোথাও বেড, কোথাও আইসিইউ, কোথাও ফ্রিজ, কোথাও এমআরআই মেশিনটাই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, একদল যুবক ঢুকে পড়ে ইমারজেন্সি বিভাগে। তাদের হাতে বাঁশ এবং লোহার রড। এরা আগে থেকেই সাধারণ বিক্ষোভকারী দের মধ্যে ভিড়ে মিশে ছিল বলে অনুমান। নির্বিচারে তাণ্ডব চালায় ইমারজেন্সি বিভাগে। পরপর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ইমারজেন্সি বিভাগের টিকিট কাউন্টার, মেইন ওয়ার্ড, আই সি ইউ, এইচ ডি ইউ, এইচ সি সি ইউ, নার্সদের রেস্ট রুম, দুটি শৌচালয় এবং ভিতরে থাকা পুলিশ ফাঁড়ি। রাত ২ টো পর্যন্ত চলে এই তাণ্ডব। এমনকি ডাক্তাদের ধরনা মঞ্চও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। তবে ঘটনাস্থল সেমিনার হল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি দুষ্কৃতীরা।