অভিরূপ দাস: একটা শুরু হয়েছে ২০২৩ সালে। অন্যটা তার ১০৭ বছর আগে। প্রথমটা কলকাতার বাজে কদমতলা ঘাটের গঙ্গা আরতি। দ্বিতীয়টি হরিদ্বারের হর কি পৌরি ঘাটের শতাব্দীপ্রাচীন গঙ্গাপুজো।
তবে ভিড়ের নিরিখে এখনই হরিদ্বারের কাঁধের কাছে নিশ্বাস ফেলছে কলকাতা। ফি মাসে ৯০ হাজার লোক হয় হরিদ্বারে। এই সেদিন শুরু হওয়া কলকাতায় গঙ্গা আরতির দেখতে গত এক মাসে দর্শক হয়েছে ৬০ হাজার! শহরে এখন ভরা বৃষ্টির মরশুম। হালকা-মাঝারি বৃষ্টি লেগেই রয়েছে। তারপরও কলকাতা পুরসভার কাছে গঙ্গা আরতি দর্শনের যে হিসাব এসেছে তা চমকে দেওয়ার মতো। মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিং জানিয়েছেন, ‘নতুন করে কিছু আসন বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। শেষ একমাসে কলকাতার গঙ্গা আরতিতে দর্শক হয়েছে ষাট হাজার।’ পুজোর মরশুমে এই ভিড় দ্বিগুণ হবে বলেই মনে করছেন মেয়র পারিষদ।
তবে ভরা বৃষ্টিতেও কীভাবে চালু রয়েছে গঙ্গা আরতি? তারক সিং জানিয়েছেন, এর রহস্য লুকিয়ে কর্পূরে। উন্নত মানের কর্পূর দিয়ে গঙ্গা আরতি করা হচ্ছে। বৃষ্টিতেও অক্ষুণ্ণ রয়েছে আরতির প্রদীপ। কর্পূরের দাম যথেষ্ট। প্রচুর পরিমাণে কর্পূরের জোগান দিতে খরচও হচ্ছে বিপুল। পুরসভা সূত্রে খবর, ফি মাসে গঙ্গা আরতির জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ হয়। বাঙালি-অবাঙালি দ্বন্দ্ব মিটিয়ে এখন গঙ্গা আরতিতে বেড়েছে বাঙালি পুরোহিতের সংখ্যাও। মোট তেইশ জন পুরোহিত রয়েছেন। তার মধ্যে নজন বাঙালি পুরোহিত। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, প্রত্যেক পুরোহিত মাসে দশ হাজার টাকা বেতন পান। চারজন সাফাইয়ের লোক রয়েছে গঙ্গা আরতির জায়গায়।
২০২৩-এর মার্চ নাগাদ কলকাতার বাজে কদমতলা ঘাটে শুরু হয়েছিল গঙ্গা আরতি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই আরতি পর্বের সূচনা করেছিলেন। এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রতিদিন সন্ধ্যায় এই আরতি অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ষোলোটি ইস্পাতের বেদির উপর দাঁড়িয়েই একশো আটটা প্রদীপে গঙ্গা আরতি করেন পুরোহিতরা। ২০২৫-এর ২ মার্চ দুবছর পূর্তি হবে তিলোত্তমার গঙ্গা আরতির।