ভগবানগোলায় খুন তৃণমূল সমর্থক, অভিযোগ পঞ্চায়েত সমিতির দিকে
এই সময় | ১৭ আগস্ট ২০২৪
এই সময়, ভগবানগোলা: গ্রামের বেহাল রাস্তা নিয়ে সোচ্চার হওয়ায় এক তৃণমূল সমর্থককে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা থানার মহিষাস্থলী গ্রাম পঞ্চায়েতের রমনা গ্রামে। নিহতের নাম বাবর আলি (৪৬)।এই ঘটনায় মূল অভিযোগ উঠেছে ভগবানগোলা পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ গোলাম শেখের বিরুদ্ধে। এ দিন সকালে উঠোনে দাঁড়িয়ে ব্রাশ করার সময়ে ৫-৬ জন বাবর আলির বাড়িতে ঢুকে পড়ে।
খুব কাছ থেকে পরপর তিনটি গুলি করা হয় তাঁকে। তার মধ্যে একটি গুলি বুকে লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। কানাপুকুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
গোলাম শেখ-সহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে ভগবানগোলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, তার মধ্যে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতরা হলো, মহিউদ্দিন শেখ, মিলন হক, টিয়ারুল শেখ, মুরসেলিম শেখ ও আরজিনা বিবি।
দীর্ঘ দিন ধরেই রমনা গ্রামের রাস্তার বেহাল দশা। বর্ষায় কাদা ভরা রাস্তায় হাঁটাচলা করাই দায়। বেহাল রাস্তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন বাবর আলি। রাস্তা না হওয়ার জন্য দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যে পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষকে দোষারোপ করছিলেন তিনি। কিছু দিন আগে চায়ের দোকানেও গোলামের সঙ্গে গোলমাল হয় বাবরের। তার জেরেই এই খুন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ।
নিহত বাবর আলির স্ত্রী তানসুরা বিবি বলেন, ‘আমার স্বামী বাড়ির উঠোনেই দাঁড়িয়েছিল। গোলাম, মুরসেলিম-সহ ৫-৬ জন দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢুকে পরপর তিনটি গুলি করে। ওই গোলামই আমার স্বামীকে খুন করেছে। বিচার চাই।’
নিহতের মেয়ে বিলকিশ খাতুন বলেন, ‘গ্রামের রাস্তা নিয়ে আমার বাবা সোচ্চার ছিল। সেই কারণেই গোলাম শেখ আমার বাবাকে খুন করেছে। পুলিশ গ্রেপ্তার করুক।’
ঘটনায় এ দিন শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ তদন্ত করে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করুক।’
ভগবানগোলার তৃণমূল বিধায়ক রেয়াদ হোসেন বলেন, ‘পুলিশের উপরে ভরসা আছে। পুলিশ তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করুক, আমরা সেটাই চাইছি।’ অন্য দিকে, জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘পারিবারিক বিবাদের কারণেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ তদন্ত করছে। নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’