দুর্গাপুরে একাদশের ছাত্রীকে গাড়িতে তুলে অপরহণের চেষ্টা
এই সময় | ১৭ আগস্ট ২০২৪
এই সময়, দুর্গাপুর: স্কুল ছুটির পরে বাড়ি ফিরছিল একাদশ শ্রেণির দুই ছাত্রী। আচমকা তাদের পথ আটকে দাঁড়ায় একটি গাড়ি। সেই গাড়ি থেকে এক আরোহী নেমে জোর করে এক ছাত্রীকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। দুই ছাত্রীই চিৎকার করে উঠলে গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয় আরোহীরা। স্কুলের শিক্ষিকা ও অভিভাবকরা বিধাননগর ফাঁড়িতে গেলে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে পুলিশ।অভিযোগ, ফাঁড়ির এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘ভগবানের ভরসায় ছেড়ে দিলে হবে না। স্কুলে যাতায়াতের সময় অভিভাবকদের সঙ্গে থাকতে হবে।’ এর পরেই মেল করে অভিযোগ জানানো হয় পুলিশ কমিশনার ও মুখ্যমন্ত্রীকে। গত ১২ অগস্ট ঘটনাটি ঘটে দুর্গাপুরের হিন্দুস্তান ফার্টিলাইজার কলোনিতে। অভিযোগ জানানোর জন্য ফাঁড়িতে যাওয়া হয় ১৫ অগস্ট বৃহস্পতিবার।
জানা গিয়েছে, ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ কাঁকসা থানা এলাকার বাসিন্দা একাদশ শ্রেণির ওই দুই ছাত্রী বাড়ি ফিরছিল। তখনই নীল রঙের একটি গাড়ি তাদের পথ আটকায়। গাড়ি থেকে এক যুবক নেমে এক ছাত্রীকে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। তবে দুই ছাত্রীই চিৎকার করে উঠলে দৌড়ে আসে কয়েকজন পথচারী। সেই সময়ে ছাত্রীকে ছেড়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায় আরোহীরা।
১৫ অগস্ট স্কুলে এসে ঘটনাটি জানান অভিভাবকরা। স্কুলের শিক্ষিকা ও অভিভাবকরা স্থানীয় বিধাননগর ফাঁড়িতে যান। কিন্তু সেখানে অভিযোগ নেওয়া হয়নি। এক অভিভাবকের অভিযোগ, ‘ফাঁড়ির এক পুলিশ আধিকারিক আমাদের বলেন, ঘটনাস্থল কাঁকসা থানার অধীন। তাই অভিযোগ দায়ের করতে হবে কাঁকসা থানায়।’
ওই অভিভাবক বলেন, ‘এর পরেই ওই পুলিশ আধিকারিক বলেন, ভগবানের ভরসায় ছেড়ে দিলে হবে না। স্কুলে যাতায়াতের সময় অভিভাবকদের সঙ্গে থাকতে হবে। এর পরে আমরা মেল করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি।’ শুক্রবার অবশ্য স্কুল ছুটির সময়ে পুলিশের গাড়ি টহল দেয় ওই এলাকায়। ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা বলেন, ‘তদন্ত শুরু হয়েছে।’
এই ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে রয়েছে ওই দুই ছাত্রী-সহ স্কুলের অন্য ছাত্রীরাও। ওই ছাত্রী বলে, ‘সেদিন বাড়ি ফেরার সময়ের ঘটনা মনে পড়লেই শিউরে উঠছি।’ তবে ১৫ অগস্টই দুপুরে স্কুলে আসে বিধাননগর ফাঁড়ির পুলিশ। ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে শিক্ষিকাদের সঙ্গে আলোচনা করেন পুলিশ অফিসাররা।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কুন্তলা পাল বলেন, ‘আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার পর মেয়েরা ও তাদের অভিভাবকরা খুব চিন্তায় রয়েছেন। তার মধ্যে আমাদের স্কুলের একটি মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা করা হলো। স্কুলের ভিতরে ও বাইরে সিসিটিভি ক্যামেরা যেখানে রয়েছে সেই জায়গা নিরাপদ। কিন্তু তার বাইরে রাস্তায় কী হবে সেটা ভেবে চিন্তা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।’