এই সময়: রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর যতই মতপার্থক্য থাকুক, বৃহস্পতিবার রাজভবনে স্বাধীনতা দিবসের চা-চক্রে হাজির থেকে সৌজন্যের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে অতিথি-অভ্যাগতদের সঙ্গে রাজ্যপাল শুভেচ্ছা বিনিময় করলেও রাজ্যের দুই সাংবিধানিক প্রধানের মধ্যে কোনও বাক্যালাপ হয়নি। প্রায় ৪৫ মিনিট মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে উপস্থিত থাকলেও কিছু মুখে তোলেননি।রাজভবন থেকে বেরোনোর সময়ে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাজভবনে এলেও আমি এক বিন্দু জল খাইনি।’ কয়েক মাস আগে রাজভবনের এক মহিলা কর্মী রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করার পর মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, তিনি আর কখনও একা রাজভবনে যাবেন না।
সেই মতো মন্ত্রিসভার কয়েক জন সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বৃহস্পতিবার রাজভবনে ঢোকেন। তাঁদের জন্যে রাজভবনের বাইরে খানিকক্ষণ অপেক্ষাও করতে দেখা যায় তাঁকে। পরে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে সঙ্গে নিয়ে রাজভবনে ঢোকেন।
রাজভবনে ঢোকার আগে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, একা রাজভবনে যাব না। রাজভবনে মহিলা কর্মচারীদের কোনও প্রোটেকশন নেই। আমি একা যাব না, ১০ জনকে সঙ্গে নিয়ে যাব। দু’জন এখনও আসেনি। তাই বাইরে অপেক্ষা করছি।’ সেই সঙ্গে তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘রাজভবনের মহিলা কর্মীর বিষয়টা তো আপনারা জানেন। আজ স্বাধীনতা দিবস। চ্যারিটি বিগিন্স অ্যাট হোম। আগে নিজের দিকে তাকান। তার পর তো অন্যের সমালোচনা করবেন।’
রাজভবনে পুরো সময়টাই মুখ্যমন্ত্রী বসেছিলেনকরিডরে। সেখানে বসেই সাংবাদিক এবং বিশিষ্ট অতিথিদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে এসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে যান রাজ্যপাল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে নমস্কার করলেও তিনি সঙ্গে সঙ্গে ঘাড় ঘুরিয়ে নেন।
তবে রাজ্যপালের স্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালের ডাকা চা-চক্রে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য আমন্ত্রণ পেয়েও আসেননি। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করে তিনি মন্তব্য করেন, ‘আমন্ত্রণ রক্ষা করতে গেলে ‘এঁদের’ সাথে দেখা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ও সৌজন্যের বিড়ম্বনা সৃষ্টি হলে আমার ছোট্ট বোনটির বিদেহী আত্মা হয়তো কষ্ট পেত। তাই আমন্ত্রণ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।’