• শিশুমৃত্যুর জেরে চুলের মুঠি ধরে মারধর নার্সকে
    বর্তমান | ১৭ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের পুলিস ক্যাম্প থেকে নতুন ভবনের দূরত্ব মাত্র কয়েক হাত। বুধবার রাতে সেই নতুন ভবনের দোতলায় শিশু মৃত্যুর জেরে কর্তব্যরত নার্সকে চুলের মুঠি ধরে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল রোগীর বাড়ির আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। কয়েকদিন আগেও কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালেই এক নার্সকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করার অভিযোগ ওঠে এক রোগীর আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। হাসপাতালে থাকা পুলিস ক্যাম্পের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নার্সকে মারধর করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বাকিরা।  শুক্রবার সকালেই হাসপাতালের নিরাপত্তা দেখতে যান কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি, আইসি তীর্থেন্দু গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁরা সুপারের সঙ্গে বৈঠক করে বেশ কিছু পরামর্শও দেন। 

    কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের শিশু বিভাগে সেদিন রাতে একবছরের শিশুকে জ্বর নিয়ে ভর্তি করা হয়েছিল। শিশুটির মা মৌসুমী পাল ও বাবা গণেশ পাল সহ তাঁর পরিবারের লোকজন যান। ওই শিশুকে এক শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা শুরু করেন। রাতের দিকে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে পরপর বেশ কয়েকটি ইঞ্জেকশন দেন কর্তব্যরত নার্স। তার বেশ কিছুক্ষণ পরেই শিশুটি মারা যায়। এরপরেই শিশুর পরিবারের লোকজন অভিযোগ তোলেন, ওই ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্যই নাকি শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। এরপরেই ওই শিশুর পরিবারের লোকজন কর্তব্যরত নার্সকে মারধর শুরু করে। অভিযোগ, নার্সকে চুলের মুঠি ধরে দেওয়ালে সজোরে মাথা ঠুকে দেওয়া হয়। ওই নার্স বলেন, আমি নিরাপত্তা কর্মীদের পাইনি। তারপরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই মৃত শিশুর বাড়ির লোকজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। বৃহস্পতিবার সকালে সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান নার্সরা। তাঁদের দাবি, নার্স কোয়াটার্রেও নিরাপত্তা নেই। হাসপাতালের নতুন ভবনে মাত্র দু’ জন নিরাপত্তাকর্মী। 

    কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার বিপ্লব দত্ত বলেন, আমরা পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। পাশাপাশি হাসপাতালে নিরাপত্তা কর্মী বাড়ানোর জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। মৃত শিশুর মা মৌসুমী পাল বলেন, আমাদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করা হয়েছে৷ আমাকে পর্যন্ত মারধর করা হয়েছে। 

    কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের উপর মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, নদীয়া ও পূর্ব বর্ধমান জেলার একাংশের মানুষের নির্ভরশীল। প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালে পুলিস ক্যাম্পে একজন অফিসার, দু’জন মহিলা পুলিস কর্মী সহ ১৪ জন সিভিক ভলান্টিয়ার থাকা সত্ত্বেও কেন এমন বার বার ঘটনা ঘটছে। হাসপাতালে পুলিসের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের অন্দরেই।
  • Link to this news (বর্তমান)