• চরব্রহ্মনগরে আজ মনসা পুজো
    বর্তমান | ১৭ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: আজ শনিবার মনসা পুজো। নবদ্বীপের ভাগীরথীর পূর্ব পাড়ে চরব্রহ্মনগরের ঘরে ঘরে পুজো হয় মনসার। শুক্রবার প্রতিমা মণ্ডপে নিয়ে আসার পর অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। যতদিন পর্যন্ত প্রতিমা মণ্ডপে বা বাড়িতে থাকবে ততদিন পর্যন্ত আমিষ খাওয়া বন্ধ। কলার ভেলায় বেহুলা ও লখিন্দর পুজোর পর সেই কলার ভেলা ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। 

    উল্লেখ্য, নদী তীরবর্তী বন্যাপ্রবণ এলাকা হওয়ায় এক সময়ে সাপের উপদ্রব ছিল এই সব এলাকায়। সেই উপদ্রব থেকে বাঁচতে সর্পদেবীকে তুষ্ট করতে পুজো শুরু করেছিলেন পূর্বসূরীরা। শোনা যায়, দীর্ঘ ৫০ বছর এই এলাকায় সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা প্রায় ঘটেনি। এছাড়াও তাঁত প্রধান এলাকায় একসময় ব্যবসা বাণিজ্য খুবই ভালো হতো। সে কারণেই এলাকার মানুষ মা মনসার পূজা শুরু করেছিলেন। কেউ আবার দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে সংসারের মঙ্গল কামনায় পুজো শুরু করেছিলেন। আজও বংশ পরম্পরায় রীতি মেনে কেউ তিনপুতুল, কেউ পাঁচপুতুল, কেউ পঞ্চনাগ, কেউ অষ্টনাগ পুজোর পাশাপাশি কেউ কেউ পাঁচ পোয়া থেকে শুরু করে ষোলো পোয়া দেবীর মূর্তি পুজো করে চলেছেন । তবে প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম চরব্রহ্মনগরের মনসা বাড়ির পুজো। শুধু পঞ্চায়েত এলাকায় নয়, নবদ্বীপ পুর এলাকার প্রাণগোপালনগর, প্রতাপনগর, সারস্বত পল্লি, চটির মাঠ এলাকায় অধিকাংশ বাড়িতে মনসা পুজো হয়।

    চরব্রহ্মনগর দক্ষিণপাড়ার ৭২ বছরের প্রবীণ নাগরিক সুরেশ দেবনাথ বলেন, চরব্রহ্মনগরের, দক্ষিণপাড়া পূর্বপাড়া, মাঝের পাড়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে প্রায় দুশোর বেশি মনসা পূজা হয়। পদ্মপুরাণে আছে মা মনসার পুজো করলে ধনলাভ হয়। সেই কারণে এলাকার ঘরে ঘরে পুজো হয়ে আসছে।

    নবদ্বীপের পূর্ব পাড়ে এই মনসা পুজোকে কেন্দ্র করে চরব্রহ্মনগর সেবক সমিতির ফুটবল মাঠে পাঁচ দিনের মা মনসা ও বেহুলা লখিন্দরের মেলাও বসে। অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুঠান। পুজোর পর মেলার শেষে ভাগীরথীতে সেই কলার ভেলা ভাসিয়ে দেওয়া হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)