• শিলিগুড়িতে কিশোরীকে অপহরণ করে গণধর্ষণ! অভিযোগ ঘিরে ধৃত ৩
    বর্তমান | ১৭ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: আরজি কর কাণ্ডের আবহে শিলিগুড়িতে যৌন নির্যাতনের শিকার এক কিশোরী। অভিযোগ, তাকে অপহরণ করে গণধর্ষণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা দিবসের দিন কাওয়াখালি-পোড়াঝার এলাকার একটি পরিত্যক্ত মাঠে ওই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। নির্যাতিতা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অভিযুক্তদের পরিচয় হয় বলে খবর। অভিযুক্ত তিনজনকেই গ্রেপ্তার করেছে এনজেপি থানার পুলিস। ধৃতদের মধ্যে দু’জন নাবালক। বাকি দু’জন পলাতক। এনিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। 

    পুলিস জানিয়েছে, ওই কিশোরীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতেই অপহরণ, যৌন নির্যাতন, গ্যাং রেপ সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিস কমিশনার সি সুধাকর বলেন, তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যেই কয়েকজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। 

    অভিভাবকদের বকুনির জেরেই স্বাধীনতা দিবসের বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় শিলিগুড়ির ওই কিশোরী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যার পর বাড়িতে না ফেরায় তার খোঁজ শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। রাতে ফুলবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি মাঠের কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করেন তার মা। মেয়ের মুখ থেকে নির্যাতনের ঘটনা শুনেই এনজেপি থানার দ্বারস্থ হন। রাতেই নির্যাতিতাকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে সে পুরোপুরি ট্রমায় আচ্ছন্ন। 

    শুক্রবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নির্যাতিতার দাদু বলেন, স্বাধীনতা দিবসের দিন বাড়ির কাজ না করায় ওকে বকাবকি করেছিলেন ওর বাবা। বিকাল ৪টে নাগাদ নাতনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। দু’জন যুবক ওকে নিয়ে যায়। কয়েকদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এদের সঙ্গে ওর পরিচয় হয়েছিল। তারপর ওই যুবকের আরও দুই থেকে তিনজন শামিল হয়। নাতনি এদিন বলেছে, ওকে মদ খাইয়ে অনেকে মিলে ধর্ষণ করে। তারপর একটি ফাঁকা মাঠে ফেলে রেখে যায়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। প্রধান অভিযুক্তের ঠিকানা জলপাই মোড়ের নতুনপাড়ায়। সে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করে। বয়স ১৯। বাকি দুই অভিযুক্তের বাড়ি শীতলাপাড়ায়, তারা নাবালক। এদের মধ্যে দু’জনের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় হয় ওই কিশোরীর। এরাই স্কুটারে করে মেয়েটিকে কাওয়াখালি-পোড়াঝাড় এলাকা নিয়ে গিয়েছিল। পুলিস অফিসাররা জানিয়েছেন, ঘটনায় ব্যবহৃত স্কুটার, মোবাইল ফোন উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশিও জারি রয়েছে। ধৃতদের এদিন জলপাইগুড়ি আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। ধৃত এক যুবককে পকসো কোর্টে তোলা হয়। বাকি দু’জনকে তোলা হয় জুভেনাইল কোর্টে। 

    পকসো কোর্টের পি পি শান্তনু অধিকারী বলেন, অপহরণ, গণধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, গুরুতর আঘাত করা প্রভৃতি ধারায় ধৃতের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতকে সাতদিনের জন্য হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিস। আদালত ধৃতকে চারদিনের জন্য পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। মেয়েটির মেডিক্যাল রিপোর্ট এখনও মেলেনি। হাসপাতালে ভর্তি থাকায় বিচারকের কাছে তার জবানবন্দি দেওয়াও সম্ভব হয়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)