• ‘ট্রমা সেন্টারে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দিই’, আতঙ্কের স্মৃতি রোমন্থন প্রত্যক্ষদর্শীর
    বর্তমান | ১৭ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘ট্রমা সেন্টারে লুকিয়ে না পড়লে জ্যান্ত থাকতাম না। হাজার খানেক লোক তাড়া করেছে। যে যেখানে পেরেছি দৌড়ে পালিয়ে গিয়েছি। কিন্তু পালানোর পরও ভয় তাড়া করেছে। যদি ধরে ফেলে! আমি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। আর জি করের আন্দোলনে অংশ নিতে এসেছিলাম। এই হাসপাতাল তেমন চেনা নেই। আর জি করেরই কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে ছুটতে লাগলাম। ওরা বলল, ট্রমা সেন্টার চল। ছুটতে গিয়ে কয়েকজন পড়েও যাচ্ছিল। হাতে পায়ে চোট পেয়েছে।’ বৃহস্পতিবার সকালে আর জি কর হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে টানা কথাগুলি বলে গেলেন মেডিক্যাল কলেজের এক পিজিটি। ভয়াবহ রাতের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তিনি আরও বললেন, ‘ট্রমা সেন্টারের একটা ঘরে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দিলাম। কিন্তু সেই ওই দরজা তো ঠেলা মারলেই খুলে যাবে। আশপাশে যে ক’টি স্ট্রেচার ছিল, সবকটা এনে দরজার গায়ে ঠেসে ধরে থাকলাম। ওই অবস্থায় প্রায় ৪৫ মিনিট কাটল। বেঁচে থাকব কি না, বুঝতে পারছিলাম না।’ আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ডাক্তার অনিকেত মাহাত বলেন, ‘ওরা প্রথমে ইমার্জেন্সিতে ঢোকে। তারপরে তিনতলা অবধি উঠে যায়। সবকিছু ভাঙচুর করতে করতে যায়। তিনতলায় ইএনটি ডিপার্টমেন্টে ভাঙচুর করে। তারপর লক্ষ্য ছিল চারতলা। কপাল ভালো, আমাদের কয়েকজন পিজিটি ছিল ওখানে। ওরা কোলাপসিবল গেট টেনে দেয়। না হলে সেমিনার রুমটাও আস্ত থাকত না।’  

    নাম না প্রকাশের শর্তে ১৫ আগস্ট রাতের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার বিবরণ দিলেন অক্সিজেন স্টোর-রুমের এক কর্মী। বললেন, ‘রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ চারদিকে তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছিল হাজারের বেশি লোকজন। আমরা স্টোররুমের শাটার নামিয়ে দিয়েছিলাম। হঠাৎ দুমদাম আওয়াজ। ভেঙে তছনছ করে দিত ওরা। এমন সময় আমাদেরই একজন কর্মীর মাথায় বুদ্ধি খেলে যায়। বন্ধ শাটারের এপাশ থেকে চিৎকার করে বলে, এখানে ভাঙচুর করলে নিজেরা আগে মরবে। চারদিকে অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে। সিলিন্ডার বার্স্ট করবে। যদি বাঁচতে চাও, এখানে ভাঙচুর করো না। কী বুঝল কে জানে, এবারের মতো বেঁচে গেলাম আমরা।’
  • Link to this news (বর্তমান)