• এম আর বাঙ্গুরে সারারাত অপেক্ষার পরও আউটডোর থেকেই ফিরলেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত
    বর্তমান | ১৭ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন চলছে। আউটডোরে ভিড় হতে পারে। তাই সুন্দরবন থেকে আগের দিন হাসপাতালে চলে এসেছিলেন। রাতে একটি ছাউনির নীচে আশ্রয় নিয়েছিলেন। মশার কামড় খেয়ে গোটারাত কোনওরকমে কেটেছে। সকাল হতেই আউটডোরের সামনে দাঁড়ান। কিন্তু ভিতরে ঢোকার পর দেখলেন চিকিৎসক নেই। জানানো হল, আন্দোলন চলছে। তাই চিকিৎসক নেই। এরপর হতাশ হয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে এম আর বাঙ্গুর ছাড়লেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত রাজু মণ্ডল। ৫৩ বছর বয়সে এ দখল নেওয়া সহজ নয়। যেন আরও অসুস্থ বোধ হতে লাগল। 

    প্যারালাইসিসে শরীরের বাঁদিক সম্পূর্ণ অবশ রাজুবাবুর। ভালো করে হাঁটাচলা করতে পারেন না। চিকিৎসক দেখাতেই হবে এই প্রয়োজনীয়তায় বৃহস্পতিবার বিকেলেই সেই ক্যানিং থেকে বাঙ্গুর হাসপাতাল চলে এসেছিলেন। তারপর শুক্রবার সকালে শুনলেন, চিকিৎসক দেখবেন না। তিনি বলেন, ‘আমাকে বলা হল, জুনিয়র চিকিৎসকরা আন্দোলন করছেন। পিজির মেইন বিল্ডিংয়ের সামনে গিয়ে দেখে আসুন।’ তারপর তিনি সেই নির্দেশ মতো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মেইন বিল্ডিংয়ের সামনে যান। সেখানে তখন জুনিয়র চিকিৎসকরা অবস্থান-বিক্ষোভ করছিলেন।  রাজুবাবু বলেন, ‘এত দূর থেকে এসেছিলাম। কোনও চিকিৎসক না থাকায় দেখাতেই পারলাম না। শরীর আর দিচ্ছে না। খুব কষ্ট হচ্ছে।’ ভুক্তভোগী তিনি একা নন।

    এদিন মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালেও একই দৃশ্য। অর্পণ দাস নামে এক রোগীর আত্মীয় বলেন, ‘রোগীরা তো আর অভিযুক্ত নয়। আন্দোলন হোক। কিন্তু আউটডোর, ইন্ডোর পরিষেবাও বজায় থাকুক। প্রাণে বাঁচুক মানুষ।’ তবে পাশাপাশি এটাও এদিন দেখা গিয়েছে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি থাকা রোগীদের সামাল দিচ্ছেন মেডিক্যাল অফিসাররা। সূত্রের খবর, আন্দোলন চলছে এই খবর মেলার পর জরুরি বিভাগে খুব কম সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এই ক’দিনে অনেকের হাসপাতাল থেকে ছুটিও হয়ে গিয়েছে। কেউ আবার ডিওআরবি (ডিসচার্জ অন রিস্ক বন্ড) করিয়ে চলে গিয়েছেন। সবমিলিয়ে জরুরি বিভাগে রোগীর চাপ কমেছে। ফলে সামাল দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে। সুজিত সরকার নামে শ্রীরামপুরের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার স্ত্রী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেড় মাস ধরে ভর্তি। সিনিয়র চিকিৎকরা ভিতরে ভালো করেই চিকিৎসা করছেন। গতকাল দু’বোতল রক্ত লেগেছিল। ব্লাড ব্যাঙ্ক খোলা ছিল। ব্লাড পেয়েছি। তা না হলে বিপদে পড়তাম।’
  • Link to this news (বর্তমান)