• ‘পুলিসের ইন্টেলিজেন্স পুরোপুরি ব্যর্থ, প্রয়োজনে হাসপাতালই বন্ধ করে দেব!’ হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনা কলকাতা পুলিসকে
    বর্তমান | ১৭ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দক্ষতার জন্য কলকাতা পুলিসকে এক সময় ‘স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড’-এর সঙ্গে তুলনা করা হতো। আর জি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় শুক্রবার সেই কলকাতা পুলিসকে হাইকোর্টের চূড়ান্ত ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল। প্রধান বিচারপতির সাফ বক্তব্য, ‘কলকাতা পুলিসের ইন্টেলিজেন্স সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এই পুলিস নিরাপত্তা দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। প্রয়োজনে আমরা সমস্ত রোগীদের অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে আর জি কর বন্ধ করে দেব।’ সেই সঙ্গে গোটা ঘটনায় আপাতত রাজ্যের কাছে হলফনামা আকারে জবাব তলব করেছে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ।  

    গত বুধবার রাতে আর জি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সর্বত্র। ঘটনা নিয়ে নতুন করে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে। এদিন জরুরি ভিত্তিতে সেই মামলার শুনানি হয়। রাজ্যকে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘এসব কী হচ্ছে?’ উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘হাসপাতালোর বাইরে একটি আন্দোলন চলছিল। সেখানে প্রায় সাত হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। হঠাৎই তাঁদের মধ্যে কয়েক হাজার মানুষ ব্যারিকেড ভেঙে হাসপাতালের মধ্যে ঢুকে পড়েন ও ভাঙচুর চালান। পুলিসও সেই হামলায় আক্রান্ত হয়েছে।’ একথা শুনেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এত লোকের জমায়েত হল, আর পুলিসের গোয়েন্দারা কিছু জানলেন না, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। ওখানে ১৪৪ ধারা জারির প্রয়োজন ছিল কি না, দেখেছেন? চিকিৎসকরা ধর্না দিচ্ছেন। বিক্ষোভ, প্রতিবাদ হচ্ছে। এটা পুলিস-প্রশাসনের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা। পুলিস নিজের কর্মীদেরই রক্ষা করতে পারেনি।’ 

    রাজ্যের তরফে অবশ্য জানানো হয়, ঘটনাস্থল (চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণ) পুরোপুরি সুরক্ষিত রয়েছে। এরপরই ওই ঘটনাস্থল অর্থাৎ সেমিনার হলের একাংশ ভাঙা নিয়ে মামলাকারীর আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন। তার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এতবড় ঘটনার পর এত তাড়াহুড়ো কীসের ছিল?’ এরপরই গোটা ঘটনায় রাজ্যকে হলফনামা আকারে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেয় আদালত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও পৃথক একটি রিপোর্ট দিতে হবে। সেই সঙ্গে আদালত বলেছে, ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট দেবে সিবিআই। অন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা দিতেও পুলিসকে নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ।    
  • Link to this news (বর্তমান)