• একটি বেড পেতে ছুটত কালঘাম, সেখানে এখন খালি ১৭০০ শয্যা!
    বর্তমান | ১৭ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নেতা-মন্ত্রী-প্রভাবশালীদের হাতেপায়ে ধরে, তাঁদের চিঠি সঙ্গে নিয়ে গেলেও যে হাসপাতালে একটি বেড পেতে কালঘাম ছুটত, কোনোমতে একটি বেডে প্রিয়জনকে জায়গা দিতে পারলে মানুষ নিজেকে ভাগ্যবান মনে করত, সেই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখন প্রায় ১৭০০ বেড খালি! রোগীতে ঠাসা ব্যস্ত ওয়ার্ডগুলি খাঁ খাঁ করছে। সাকুল্যে ভর্তি রয়েছেন মাত্র আড়াইশো রোগী। এই পরিমাণ রোগীর জন্যই খাবারের অর্ডার করা হয়েছে এদিন। যাঁরা ভর্তি আছেন, তাঁদের অনেকেরই প্রিয়জন এদিন জানিয়েছেন, মানে মানে রোগীকে ছুটি করিয়ে বাড়ি নিয়ে যেতে পারলে বাঁচি। 

    রোজ যে মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরে  বছরের আর পাঁচটা দিন পাঁচ হাজারের বেশি রোগী হয়, সেখানে এদিনের আউটডোরে ডাক্তার দেখাতে পেরেছেন মাত্র ২৬৫ জন! বৃহস্পতিবার এখানে ভর্তি ছিলেন সাড়ে চারশো রোগী। ফাঁকা ছিল প্রায় ১৪৫০ বেড। ভয়াবহ ভাঙচুরের পর একের পর এক রোগী ডিসচার্জ নেওয়ায় ভর্তি রোগী সংখ্যা আরও কমেছে। এক কর্মী জানালেন, এমন অচলাবস্থা চলতে থাকতে একদা দেশের অন্যতম সেরা এই মেডিক্যাল কলেজ সম্পূর্ণ রোগীশূন্য হয়ে পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। 

    বাস্তব হল, আর জি কর কাণ্ডের জেরে কর্মবিরতির জন্য পরিষেবা ভেঙে পড়েছে—এই কথা বলবার মতোও নেই এখন এখানে। সপ্তাখানেক হল, টিমটিম করে চলছিল ইমার্জেন্সি। ১৫ আগস্ট সেখানে ভয়ঙ্কর ভাঙচুরের ঘটনার পর ইমার্জেন্সিতে আর পরিষেবা দেওয়ার মতো কোনোকিছু আস্ত নেই। মূল ইমার্জেন্সি তছনছ হয়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ ঢিল ছোড়া দূরে ট্রমা বাড়িতে ইমার্জেন্সি চালু করেছিল বৃহস্পতিবার। কেমন রোগী হয়েছে এদিন সেখানে? হাসপাতাল সূত্রের খবর, সেখানে এদিন ছিল মাছি মারার দশা! সাকুল্যে ১৫ জন রোগী এদিন ভর্তি হয়েছেন। তাঁরাও আবার হাসপাতালেরই রোগী। ইমার্জেন্সি বাড়ির এই হাল হওয়ায় ডায়ালিসিসের এসব রোগীকে ফের নতুন করে অন্যত্র ভর্তি করা হয়েছে। এরই মধ্যে আবার দুটি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে এদিন। দুটিই ঘটেছে ট্রমা সেন্টারে। দমদমের বাসিন্দা ইলা দে দুর্ঘটনায় জখম হন। তাঁকে আনা হয়েছিল সকাল ১০টা নাগাদ। মারা যান দুপুর ১২টা নাগাদ। অন্যদিকে, পথ দুর্ঘটনায় জখম উত্তম দাস নামে আর একজনকে আনা হয় দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ। তিনি মারা যান বেলা সাড়ে তিনটেয়। 
  • Link to this news (বর্তমান)