এই সময়, বর্ধমান: বেঙ্গালুরুতে কাজের ট্রেনিং সেরে বর্ধমানের বাড়ি ফেরার দু’দিনের মাথায় খুন করা হয় প্রিয়াঙ্কা হাঁসদা (২৪) নামে এক তরুণীকে। ১৪ অগস্ট রাতে বর্ধমান থানার নাদুর ঝাঁপানতলার বাড়ি থেকে কিছু দূরে একটি ফাঁকা মাঠ থেকে তাঁর গলাকাটা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে ৯ সদস্যের একটি স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (সিট) গঠন করা হয়েছে বলে জানান জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ সিং।শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠতে তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে সিট-এর প্রাথমিক তদন্ত ইতিমধ্যে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। মেয়েটির ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। শিগিগিরই সে ধরা পড়বে।’
এ দিকে, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে ‘মেয়েদের রাত দখলে’র কিছু আগেই উদ্ধার হয়েছিল ওই তরুণীর দেহ। জানাজানি হতেই সোশ্যাল মিডিয়ার একাধিক পোস্টে ছড়ায় বিভ্রান্তি। দাবি করা হয়, মেয়েটিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। আবার কারও দাবি, কার্জন গেটের কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসার আগে খুন করা হয়েছে তাঁকে।
এমন পোস্ট করা একাধিক ব্যক্তিকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছে জেলার সাইবার ক্রাইম বিভাগ। এ প্রসঙ্গে এ দিন এসপি বলেন, ‘ময়না-তদন্তের রিপোর্টে পরিষ্কার লেখা, তরুণী খুনে ব্যবহার করা হয়েছে ধারালো অস্ত্র। তাঁকে ধর্ষণ করা হয়নি। যৌন নির্যাতন চালানো হয়নি। যাচাই না করে সোশ্যাল মিডিয়ায় যা কিছু পোস্ট করা এ বার বন্ধ করা উচিত। এমন ভুয়ো পোস্ট করা হলে আগামী দিনে কড়া ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।’
এসপি আরও জানান, ঘটনার দিন রাতে নিজের মোবাইল ফোন নিয়ে বাথরুমে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন ওই তরুণী। যেখানে দেহ উদ্ধার হয় সেখানে কোনও মোবাইল ফোন বা অস্ত্র পাওয়া যায়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মেয়েকে নিয়ে মিথ্যা পোস্ট করায় ক্ষুব্ধ মৃতের বাবা সুকান্ত হাঁসদা।
এ দিন তিনি বলেন, ‘পুলিশি তদন্তে আমাদের ভরসা রয়েছে। মেয়েটিকে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করিয়েছিলাম। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় (দূরশিক্ষা) থেকে দর্শনে এমএ পাশ করে। একটি শপিং মলে সেলসগার্ল হিসেবে কাজ করত। ওরাই বেঙ্গালুরুতে ট্রেনিংয়ে পাঠিয়েছিল। সেখান থেকে ১২ তারিখে ফেরে। কী ভাবে কী হলো কিছুই বলতে পারছি না।’
মৃত তরুণীর মা কাজল হাঁসদার বক্তব্য, ‘মেয়েকে সবসময় নজরে রাখতাম। ওর সঙ্গে কোনও ছেলের সম্পর্ক ছিল বলে আমার জানা নেই।’