আরজিকর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে সোমবার এসইউসি আইয়ের ডাকা ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটের প্রভাবে জেলায় বেসরকারি বাস চলাচল বিঘ্নিত হল। জেলার অধিকাংশ রুটে এদিন প্রায় বন্ধ থাকল বাস চলাচল। কোনও কোনও রুটে সকালের দিকে দু-একটা বাস চলাচল করলেও বেলা বাড়তেই থমকে যায় সব বাসের চাকা। তবে কৃষ্ণনগর, নবদ্বীপ প্রভৃতি বাসস্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার বাস এদিন সকালে নির্দিষ্ট সময়েই ছেড়ে যায়।
নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, হাতে গোনা দু-একটি ছাড়া বেশিরভাগ রুটেই এদিন পথে নামেনি বেসরকারি বাস। জেলা সদর কৃষ্ণনগর থেকে প্রতিদিন ৫৯টি রুটে ৬০০টির বেশি বাস চলে করে। এদিন তার সিংহভাগই চলেনি। রানাঘাট স্ট্যান্ড থেকে ৫০টির বেশি রুটে বাস চলাচল করে বলে জানা গিয়েছে। এদিন ওই স্ট্যান্ড থেকে দু-একটি ছাড়া বাস চলেনি। জেলা বাস মালিক সমিতির তরফে কুনাল ঘোষ বলেন, “করিমপুর, পাটিকাবাড়ি, দত্তপুলিয়া ইত্যাদি রুটে বিক্ষিপ্ত ভাবে দু-একটা বাস চলেছে। অন্য রুটগুলিতে বাস প্রায় চলেনি।” কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুর, শিকারপুর, ডোমকল প্রভৃতি রুট মিলিয়ে ৯০টি বাস চলাচল করে। এদিন তার মধ্যে পাটিকাবাড়ি, করিমপুর দুৃ একটা বাস চলেছে। ধর্মদা-মুড়াগাছা রুটে একটি বাস চলেছে। নদিয়ার অন্যতম ব্যস্ত কৃষ্ণনগর-রানাঘাট ভায়া শান্তিপুর রুটে গোটা তিনেক বাস চলেছে। কৃষ্ণনগর-বাবলারি রুটে একটি বাস সকালে এলেও আর ফেরেনি। অন্যদিকে কৃষ্ণনগর-বাদকুল্লা, কৃষ্ণনগর-মাজদিয়া, হাঁসখালি-বগুলা, কৃষ্ণনগর-নবদ্বীপ ঘাটের মতো বাসরুটগুলিতে একটিও বাস চলেনি।বাসমালিক অসীম দত্ত বলেন, “কৃষ্ণনগর-রানাঘাট ভায়া শান্তিপুর রুটে ৫৪টি বাসের মধ্যে এদিন তিনটে বাস চলেছে। করিমপুর, শিকারপুর, ডোমকল মিলিয়ে ওই রুটে রোজ ১০৫টা বাস চলে। এদিন খুব বেশি হলে তিন-চারটে চলেছে। কৃষ্ণনগর-বাবলারি রুটে ২৩টা বাস চলে। এদিন দু-একটা চলেছে। বাস শ্রমিকেরা রাজি ছিলেন না বাস চালাতে।”
অন্যদিকে রানাঘাট বাসমালিক সমিতির তরফে মদন দাস জানান, চাকদহ এবং হরিণঘাটা-কাঁচরাপাড়া রুটে অল্প কিছু বাস চলাচল করেছে। রানাঘাট, চাকদহ রুটের বেশিরভাগ বাস পথে নামেনি। তিনি বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দল ধর্মঘট ডাকলে সেদিন দুর্ঘটনা বা কোনও কারণে বাসের ক্ষতি হলে বিমা কোম্পানির টাকা পাওয়া যায় না। তাই কেউ ঝুঁকি নিতে চায় না। তা ছাড়া এই ধর্মঘটে বাসকর্মীরাও বাস চালাতে চায়নি। তাই জেলায় বাস চলেনি বললেই হয়।”
এদিন স্কুল-কলেজ অফিস, আদালত স্বাভাবিক ভাবে চললেও মায়াপুর বা নবদ্বীপে বহিরাগত পর্যটকের সংখ্যা ছিল খুবই কম। মায়াপুর-ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস বলেন, “যদিও ঝুলন উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। তবুও অন্য দিনের তুলনায় এদিন বহিরাগত ভক্তের সংখ্যা ছিল বেশ কম। অন্য দিনের তুলনায় বাসও এসেছে কম।” নবদ্বীপ মহাপ্রভু মন্দিরের সেবায়েত লক্ষ্মীনারায়ণ গোস্বামী বলেন, “আজ লোকজন এসেছে কম। খবর পেয়েছি বিভিন্ন জায়গায় আটকে আছেন পর্যটকরা।”