গঙ্গার জলস্তর চরম বিপদসীমা অতিক্রম করল মালদহে। এর জেরে মানিকচক ব্লকের ভূতনির বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ভূতনি সেতু ও বাঁধের সংযোগকারী রাস্তার উপর দিয়ে জল বইতে শুরু করায় ভূতনির সঙ্গে মানিকচক ব্লকের সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। বাড়িঘরে জল ঢুকতে শুরু করায় ত্রাণ শিবির ও বাঁধের উপর দুর্গতদের ভিড় বাড়ছে। এ দিন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল ভুতনির কিছু এলাকা পরিদর্শন করে, জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করে। ভূতনিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিলি ও দুর্গতদের উদ্ধারের দাবিতে এ দিন মানিকচকের বিডিওকে স্মারকলিপি দেয় সিপিএম।
এক বছর আগে ভূতনির কেশরপুর কলোনিতে গঙ্গার জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছিল বাঁধের প্রায় দেড়শো মিটার অংশ। সেই বাঁধ গত এক বছরে মেরামত করা হয়নি বলে অভিযোগ। গঙ্গার জল বিপদসীমা ছাড়াতেই রবিবার ভোর থেকে সেই ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে ভূতনিতে। শুক্রবার জলস্তর চরম বিপদসীমা অতিক্রম করে। এ দিন জলস্তর পৌঁছে যায় ২৫.৩১ মিটারে। গঙ্গার জল বাড়ায় এ দিন ভূতনির বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ভূতনির উত্তর ও দক্ষিণ চণ্ডীপুর এবং হীরানন্দপুর পঞ্চায়েত এলাকায় রাস্তাঘাট আগেই ডুবে গিয়েছিল। এ বার বাড়িঘরেও জল ঢুকতে শুরু করেছে। বাসিন্দারা ত্রাণ শিবিরে বা বাঁধে আশ্রয় নিচ্ছেন।
মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া এ দিন বলেন, ‘‘দুর্গতদের উদ্ধার যেমন চলছে, তেমনই ত্রাণ শিবিরগুলিতে শুকনো ও রান্না খাওয়া করা খাবার বিলি করা হচ্ছে। বাঁধের উপর যাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদেরও সেখানে রান্না করা খাবার বিলি করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। পানীয় জল ও অস্থায়ী শৌচাগারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’’ এ দিন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তিন প্রতিনিধি বিজয়প্রসাদ মুখোপাধ্যায়, অনুপম ভট্টাচার্য ও সমীপ গেহলট ভূতনির কিছু এলাকা পরিদর্শন করেন। বিকেলে জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, ‘‘বন্যা-পরবর্তী সময়ে রোগ মোকাবিলা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।’’ এ দিন সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দেবজ্যোতি সিংহ বলেন, ‘‘ভূতনির বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার নিয়েছে। তিনটি পঞ্চায়েতের দুর্গতদের পর্যাপ্ত ত্রাণ ও উদ্ধারের দাবি জানিয়ে মানিকচকের বিডিওর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি।’’