জঙ্গলমহলের আদলে আর জি করে পরিকল্পিত হামলা! ইঙ্গিত মিলেছে, দাবি পুলিশের
প্রতিদিন | ১৭ আগস্ট ২০২৪
অর্ণব আইচ: আর জি কর হাসপাতালে মাঝরাতের তাণ্ডব ‘পরিকল্পিত’। অন্তত দুদিন ধরে এই হামলার পরিকল্পনা করা হয়। লালবাজারের তদন্তে উঠে এসেছে এই তথ্য। শুক্রবার পুলিশের এক কর্তা জানান, তাঁরা হাতেনাতে কোনও তথ্য বা প্রমাণ না পেলেও এই ব্যাপারে ‘আভাস’ পেয়েছেন। জঙ্গলমহলে (Junglemahal) যেভাবে পুলিশকে অন্য কাজে ব্যস্ত রেখে হামলা চালানো হত, এই পরিকল্পনার সঙ্গে সেই ‘মোডাস অপারেন্ডি’র মিল রয়েছে। পুলিশের দাবি, বুধবার রাতে পরিকল্পিতভাবে শহরকে অচল করে রেখে এই হামলা চালানো হয়েছে। রীতিমতো ‘ভাবনাচিন্তা’ করে এই হামলা চালানো হয়।
এই হামলার পিছনে মূল মাথা কে বা কারা, তা জানতে মরিয়া তদন্তকারীরা। হামলা চালানোর জন্য কোনও হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) গ্রুপ বা সোশাল মিডিয়ায় কোনও গ্রুপও তৈরি হয়েছিল কি না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। মূলত ছবি ও ভিডিও দেখে উত্তর কলকাতা, উত্তর শহরতলি ও হাওড়া থেকে একে একে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে কেউ বা গাড়ি চালায়, কেউ ফুড ডেলিভারি বয়, কেউ বা পাড়ার দোকানে কাজ করে। পুলিশের কাছে ধৃতদের দাবি, ছোট ছোট দলে তারা এসেছিল। ধৃত ও তাদের সঙ্গে যারা ছিল, তাদের সঙ্গে ফোন বা সোশাল মিডিয়ায় (Social Media)কাদের কাদের যোগাযোগ ছিল, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে।
পুলিশের মতে, এমনও হওয়া সম্ভব যে, আর জি কর হাসপাতালে (RG Kar Hospital) প্রতিবাদের নামে একসঙ্গে অনেককে রাস্তায় নামানো হয়। পুলিশ তা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। সেই ফাঁকে মূল তাণ্ডবকারীরা হাসপাতালে আসে। যদিও অন্তত পাঁচজন মাথার নাম পুলিশের কাছে এসেছে। তাদের মধ্যে একজন বেলগাছিয়া থেকে একটি দলকে নিয়ে আসে। এছাড়াও কাশীপুর হয়ে শ্যামবাজার, চিৎপুর থেকে টালা, বড়তলা, দমদম থেকে হামলাকারীদের নিয়ে আসা হয়। এই মাথারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখে বলে পুলিশের কাছে খবর। আবার ধৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, তারা বন্ধুদের কথা শুনেই চলে আসে। এমনকী, দমদম থেকে হেঁটেও এসেছে কয়েকজন। হাসপাতালে হামলা হতে দেখে তারাও তাতে যোগ দেয়।
পুলিশ আরও জানতে পারে, মূলত আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের (Doctors) ভয় দেখানোই উদ্দেশ্য ছিল। আবার চারতলায় গিয়ে সেমিনার রুমেও তাদের হামলা চালানোর ছক (Plan to attack) উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। যদিও পুলিশের মতে, তিনতলা ও চারতলার মধ্যে হামলাকারীরা গুলিয়ে ফেলে। তারা তিনতলায় গিয়ে কোনও হল খুঁজে পায়নি। তাই চারতলায় আর ওঠেনি। তাই সেমিনার হলের ধারেকাছে কেউ পৌঁছতে পারেনি। পুলিশ জেনেছে, আন্দোলনরত কয়েকজন প্রথমে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙে। কিন্তু তারা হাসপাতালের ভিতর ঢুকে ভাঙচুর চালায়নি। হামলা চালানোর পিছনে যে মাথারা রয়েছে, তাদের ধরে জেরা করার পর আরও তথ্য মিলবে বলে আশাবাদী পুলিশ।