আরজি করে হামলায় চোখে গভীর ক্ষত, মুখ খুললেন কনস্টেবল শম্পা
এই সময় | ১৭ আগস্ট ২০২৪
‘চাকরিটাই তো এমন! ভয় কেন পাব? সেদিনকে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিজের ডিউটি করছিলাম। এভাবে আমাদের উপর আক্রমণ করবে বুঝতে পারিনি।’ তবে, আতঙ্ক কিছুটা রয়েই গিয়েছে শম্পা প্রামাণিকের। বুধবার মধ্যরাতে আরজি কর হাসপাতালে হামলার ঘটনায় আক্রান্ত হন পুলিশ কনস্টেবল শম্পা।রাত তখন প্রায় সাড়ে তিনটে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কর্মী শম্পা বাগুইআটিতে ‘রাত দখল’ কর্মসূচির জন্য যাঁরা রাস্তায় হাঁটছিলেন, তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্বে ছিলেন। এর মাঝেই আরজি করের সামনে কিছু দুষ্কৃতীরা হামলা শুরু করে। ভাঙচুর চালানোর পর রাস্তায় বেরিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করে। সেই সময় একটি ইট এসে লাগে শম্পার ডান চোখে। ঝরঝর করে রক্ত পড়তে থাকে। চোখে হাত চেপে বসে পড়েন শম্পা। ইউনিফর্ম রক্তে ভেসে যাচ্ছে। তাঁকে দেখে অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে শম্পার। ডান চোখে খুব আবছা দেখছেন। দুটো চোখ খুলে পরিষ্কার তাকাতে পারছে না। শুক্রবার রাতে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। হিংস্র আন্দোলন মাঝেমধ্যেই প্রতিহত করতে হয় পুলিশ কর্মীদের। শম্পা বলেন, ‘সেদিন এভাবে আক্রমণ হবে বুঝতে পারিনি। তবে, পরবর্তীকালে আরও ভালো প্রোটেকশন নিয়ে যেন কাজটা করতে পারি, সেদিকে লক্ষ্য রাখব।’
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে বুধবার মধ্যরাতে অভিনব কর্মসূচি পালন হয় গোটা রাজ্যে। মহিলাদের সুরক্ষার দাবিতে মিছিল চলতে থাকে কলকাতাতেও। নদিয়ার শান্তিপুর লক্ষীনাথ পুরের বাসিন্দা কনস্টেবল শম্পা প্রামাণিক সেদিন ডিউটিতে ছিলেন। কাজ ছিল রাস্তায় মিছিলে অংশগ্রহণ করা নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। জমায়েতের মধ্য থেকেই দুষ্কৃতীরা পুলিশের দিকে ইট,পাথর ছুড়তে থাকে। এভাবে হঠাৎ সবাই মিলে আক্রমণ করতে আসবে ভাবা যায়নি, দাবি কনস্টেবলের। তবে, সেদিনের রাতটা ভুলতে পারছে না শম্পা।
শম্পার এই অবস্থা দেখে চিন্তিত তাঁর পরিবারের সদস্যরা। শম্পার বাবা বাসুদেব প্রামাণিক বলেন, ‘আমরাও আতঙ্কের মধ্যে আছি। একটা মেয়ের মর্মান্তিক পরিণতির জন্য সবাই প্রতিবাদ করছিল। সেখানে আমার মেয়ে তো ডিউটি করছিল। তাঁকে কেন মারা হল? কী দোষ করেছিল?’ শম্পার পরিবারের সদস্যরা জানান, এই ঘটনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের সকলকে খুঁজে বার করে সকলকে শাস্তি দেওয়া হোক।