‘সম্ভব হলে মেয়েদের নাইট ডিউটি থেকে অব্যাহতি’! মহিলাদের নিরাপত্তায় ১৭ দফা নির্দেশিকা দিল নবান্ন
আনন্দবাজার | ১৭ আগস্ট ২০২৪
আরজি কর-কাণ্ডের আবহে কর্মস্থলে মহিলাদের নিরাপত্তায় জোর দিতে একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় রাতের কর্মস্থলে মহিলাদের নিরাপত্তায় মূলত ১০টি এবং অতিরিক্ত সাতটি অর্থাৎ মোট ১৭টি পদক্ষেপের কথা জানান। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, যেখানে এবং যত দূর সম্ভব মহিলাদের রাতের শিফ্ট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
শনিবার দুপুরে নবান্নে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠকে ছিলেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, স্বাস্থ্যসচিব, কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের অন্য শীর্ষকর্তারা। ভার্চুয়াল মাধ্যমে ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই স্থির হয় যে, রাতে কর্মস্থলে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে অন্তত ১৭টি পদক্ষেপ করবে রাজ্য প্রশাসন।
সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে রাতে কাজ করা মহিলাদের জন্য পুলিশের তরফে ‘রাত্তিরের সাথী’ নামের মোবাইল অ্যাপ আনা হচ্ছে বলে জানান আলাপন। এই অ্যাপের মাধ্যমে নিকটবর্তী থানার সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করতে পারবেন মহিলারা। তা ছাড়া পুলিশ এবং বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার সহযোগিতায় ওই একই নামে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী গড়তে চলেছে রাজ্য। রাতে মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়াই মূল কাজ হবে এই বাহিনীর।
সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে মহিলাদের জন্য পৃথক বিশ্রামকক্ষ, শৌচালয় এবং প্রতিটি তলায় জলের বন্দোবস্ত রাখতে বলা হয়েছে। আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার কী ভাবে রাতে চারতলার সেমিনার রুমে ঢুকে পড়লেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে, হাসপাতালগুলিতে প্রত্যেকের গলায় পরিচয়পত্র ঝোলানো বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
আরজি করে নিহত চিকিৎসক নির্ধারিত সময়ের পরেও কাজ করছিলেন বলে আগেই অভিযোগ উঠেছিল। শনিবার নবান্নের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, কোনও পরিস্থিতিতেই মহিলা চিকিৎসকদের ১২ ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবে না। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও এই সমস্ত নির্দেশিকার আওতায় আনার কথা বলেছে রাজ্য। ‘বিশাখা কমিটি’কে সক্রিয় করার কথা বলা হয়েছে সরকারের তরফে। তবে মহিলা নিরাপত্তায় দেওয়া ১৭ দফা নির্দেশিকার একটিতে বলা হয়েছে, যেখানে এবং যত দূর সম্ভব মহিলাদের রাতের শিফ্ট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। আলাপন বলেন, ‘‘যেখানে এবং যত দূর সম্ভব মহিলাদের রাতের শিফ্ট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।’’